একটি শহর- কাঁচের শহর, এমনভাবে এলোমেলো
ভরদুপুরে প্রগাঢ় এক বর্ষণে তার ঠাঁই হলো তাই-
সব ভাসিয়ে জলগুলো তার বুক ছাপিয়ে পথ ভেজালো
এমনভাবে শুদ্ধ হলো, পবিত্রতার মন্ত্র পেলো।
অগ্রগামী বজ্রধারায় আকাশ ভেঙ্গে নামলো নহর
ঈশানকোণে দগ্ধ কালো- মেঘে আকাশ খুব হারালো
প্লাবন আসার খবর পেয়ে থমকে গেলো গাড়ীর বহর
অতর্কিত এ বর্ষণে শীতল হলো তপ্ত শহর।
লক্ষ কোটি কদম ফুলে তারকরাজি গাছের ফাঁকে
গোটা শহর ইলিশ মাছের চালান আসার অপেক্ষাতে।
বৃষ্টিভেজা কুকুরগুলো ছুটছে রোডের মাঝ বরাবর
দাঁড়কাকেরা ঝিম মেরেছে ইলেক্ট্রিকের তারের উপর।
ভরদুপুরে নামলো আঁধার, সন্ধ্যা নামার ব্যতিরেকে
বৃদ্ধ, যুবা, নবজাতক, চড়ুই থেকে বন্য চাতক
পুরুষ, নারী, গাছের সারি- অবাক হয়ে বর্ষা দেখে
এই শহরে বর্ষাধারা নতুন সুরের কাব্য লেখে।
বস্তি থেকে উদাম ছেলের দল বেরিয়ে, পথ পেরিয়ে
বল পায়ে ঐ ছুটছে দেখো থমকে থাকা জ্যাম এড়িয়ে।
রিক্সাওয়ালা চুপটি করে ফুঁকছে বিড়ি পর্দা ফেলে
পথচারী করছে লড়াই মাথা গোঁজার জায়গা পেলে।
বিষণ্ণ এই দুপুরবেলা, বর্ষণে পথ খুব বেগতিক
বৃষ্টি পড়ায় সময় গড়ায়, বান ডেকেছে ধূলার ধরায়
ঘন ঘন উদাস চোখে দেখছে ঘড়ি ক্লান্ত পথিক
‘এ বছরেও আসবে প্লাবন’ আগাম খবর হচ্ছে সঠিক।
সত্যি কি জল ভাসিয়ে নেবে দালানকোঠা, আবাস, বসত?
তবুও জেনো, এ বর্ষণে বাঁচবে শহর, হাসবে মানুষ
ওষ্ঠাগত তৃষ্ণা মেটায়, পূর্ণ করে জলের রসদ
সঞ্চারী এ বর্ষাধারা, প্রাণ বাঁচানোর নিচ্ছে শপথ।