আমি পথিক।
কবে পথ শুরু হয়েছিল, কবে পথ শেষ হবে জানা নেই।
আমি পথ চলি।
চলনই আমার ভবিতব্য।
গতকাল একটা গাছতলা পেরিয়েছি।
সেই সতেজ গাছের ততোধিক সবুজ পাতাগুলো
আজ বাদামিবর্ণ হয়ে স্মৃতিপটে ভিড় জমাচ্ছে।
কাল রাস্তা বড্ড খারাপ ছিল।
শ্রান্ত অবসন্ন শরীর আর মচকানো রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত পা নিয়ে
একটা পাথরে ঠোক্কর খেয়ে যখন উল্টে পড়লাম,
তখন রাস্তার পাশের গাছটার দিকে চোখ গেল।
ভারাক্রান্ত মনটা নিমেষে উৎফুল্ল হয়ে উঠলো।
ভাবলাম দুদন্ড জিরিয়ে নিই,
তারপরে নাহয় পথের বোঝা বাড়ানো যাবে।
আশ্রয় নিলাম।
ফুরফুরে বয়ে চলা হাওয়া গাছের কচি সবুজ পাতা উড়িয়ে নিয়ে
আমার কপালের মধ্যিখানে স্থাপন করলো।
শীতল স্নিগ্ধ কচিপাতা আমার কোটরাগত দুটো চোখে
স্নেহের পরশ বুলিয়ে দিল।
আমি ঘুমিয়ে পড়লাম।
স্বপ্ন দেখলাম, গাছ হাসছে।
আমার আতিথ্য পেয়ে নাকি গাছের অপেক্ষা শেষ হয়েছে।
ঝলমল করে উঠছিল আর শিশুর মতো হাসি হেসেছিল।
আমার ঘর বাঁধতে ইচ্ছে করছিল।
গাছকে শুধালাম, ঘর বাঁধি তোমার পাশে?
আমার মাথায় একগুচ্ছ পাতা ঝরে পড়লো।
ঘুম ভাঙলো, মনে পড়লো পথ বাকি।
বিদায় বলতে পারলাম না।
পথের খানাখন্দ ডিঙিয়ে পিছন ফিরে তাকাতে পারলাম না।
আমার কাছে উড়ে এলো পাতা। বিবর্ণ।
আমি স্মৃতির ঝোলায় রেখে দিলাম।
পথ শেষ করতেই হবে।