তুমি হয়তো দাঁড়িয়ে আছো নির্লিপ্ত কার্নিশে,
শীতের আবেশে নিজেকে হারিয়ে,
কফির কাপে জীবনের তৃপ্তি খুঁজে নিচ্ছো।
ধোঁয়ার সর্পিল চক্রাকার মিশে যাচ্ছে বাতাসে,
আর তুমি যেন তাকে ধরতে চেয়ে
দৃষ্টির অজানা প্রান্তে নিজেকে বিলিয়ে দিচ্ছো।
এই মুহূর্তে তুমি সময়ের বাইরে,
আলোছায়ার এক অনন্ত সুরের মধ্যে।

আর আমি?
আমি হাঁটছি শহরের এক বিস্তীর্ণ কোলাহলে—
ধুলোবালির দাহ আর ল্যাম্পপোস্টের লোলুপ আলোয় মিশে।
প্রতিটি গলি, প্রতিটি পথ,
আমার ক্লান্ত পায়ের গল্প বহন করে।
এই শহর আমার,
তবু এখানে আমি অনাহূত অতিথি।
সন্ধ্যার তপ্ত তাড়াহুড়ো আর রাতের নিস্তব্ধতার মাঝখানে,
আমি খুঁজে ফিরি হারানো মুহূর্তের প্রেতছায়া—
যে স্মৃতি এখনো অদৃশ্য বন্ধনে আমাকে বেঁধে রাখে।

তোমার কফি-তৃপ্তি আর আমার অন্ধকারে পথচলার মধ্যে
যে বিস্তর ব্যবধান, তা সত্ত্বেও
আমাদের হৃদয়ের কোথাও যেন
একটা লুকায়িত সেতু রয়ে গেছে।
কোনো কল্পনাশ্রিত ভাষায়,
কোনো দুর্বোধ্য সাহিত্যে সেই সেতু অনুরণন তোলে,
স্পর্শ করে অদৃশ্য এক অনুভূতির অন্তরালে।

আমরা হয়তো দুটি ভিন্ন পৃথিবীর যাত্রী,
স্মৃতির বুননে একত্রিত;
সময় ছায়ায় বিলীন, অথচ অপরিবর্তিত।