রাফাহ শহরে নিঃশেষ হলো প্রহর,
একটি প্রাণও আর নেই—নেই কোলাহল, নেই স্বর।
মাটির নিচে চাপা পড়ে আছে ১ লাখ ১৭ হাজার প্রাণ,
বিশ্ব সভ্যতার চোখে এ যেন এক বোবা ঘুমের গান।
বোমার তাণ্ডবে উড়ে যায় শিশুরা, মায়ের কোলে লাশ,
ভাঙা খেলনা, ছিন্ন স্বপ্ন, চারদিকে শুধু নিঃশেষ আশ।
মসজিদে আকসা ধ্বংসের আহ্বানে আজ আর নেই হুঙ্কার,
বিশ্ব মুসলিম নিঃশব্দে দেখে—আত্মা যেন আজ ভারাক্রান্ত, গারো।
তুরস্ক-পাকিস্তান—যাদের ছিল পারমাণবিক অভিমান,
তাদের নিস্তব্ধতা আজ ইতিহাসের লজ্জার প্রমাণ।
মিশরের নীলনদ, শতাব্দীর স্রোতে যেখানেই জীবন দিয়েছে,
গাজার শিশুর কান্না শুনে সে স্রোতও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
তেলের সাগরে ডুবে থাকা সৌদি, আমিরাত, মরুদেশের সিংহাসন,
পেট্রোলহীন অ্যাম্বুলেন্সের বোবা আর্তনাদ শুনেও নিঃসঙ্গ।
উম্মাহর স্বপ্নে বিভোর তুরস্ক, নেতৃত্বের দাবিদার,
তবু গাজার রক্তে হাত বাড়ায়নি তারা—আছে ইতিহাসে তিক্ততার ভার।
৫০ লাখ সৈন্য, ক্ষেপণাস্ত্র, হাইড্রোজেন বোমা—সবই কেবল সজ্জা,
গাজার আকাশে একটিও সুরক্ষা ছায়া পড়লো না, হৃদয় ভরলো লজ্জা।
বিশ্ব মুসলিম ছিল কেবল দর্শক, রোমের গ্যালারিতে বসা,
গ্ল্যাডিয়েটরের মৃত্যু দেখে যারা কাঁদে না—তারা কেমন ভাষা?
গোল্ডা মেয়ারের সেই কথা আজও রক্ত ঝরায় কানে—
"ঘুমন্ত জাতি" আমরা—চোখ না মেলেই হারিয়ে ফেলি প্রাণে।
আল-আকসার আগুন, গাজার কান্না, রাফাহর শ্মশান,
সবই থেকে যাবে ইতিহাসে—মুখবন্ধ, চোখবাঁধা মুসলমান!
তবু বিশ্বাসের নাম ফিলিস্তিন, আশার নাম শহীদ,
প্রতিশোধ নেবে প্রকৃতি, মাটির রক্ত হয়ে হবে শক্তিশালী চিত্ত।
এই নিঃসঙ্গ ভূমি একদিন আবার হবে জনমানবের প্রাণ,
তখন মুসলমানের হাতে ফিরবে পতাকা—ফিলিস্তিনে হোক স্বাধীনতার গান।
কোরআনের শপথ—গাজার ইতিহাস কখনও মুছবে না,
বরং একদিন জেগে উঠবে তারা—দুনিয়ার সব সীমা ছাড়াবে না।
আল্লাহ তুমি করো তাদের জান্নাতবাসী, করো আমাদের চোখ খুলে,
মৃত্যুর আগে যেন দেখে যেতে পারি—জুলুমের কবর রচিত হলো বলে।
#কাব্য