▪ তের্জা রিমা (Terza Rima) বা টের্জা রাইমা সনেটঃ-
প্রথম ইংরেজ কবি হিসেবে তের্জা রিমাতে লিখেছিলেন জেফ্রি চৌসার (১৩৪৩-১৪০০), যিনি এটিকে তার "Complaint to His Lady" কবিতায় প্রয়োগ করেন।
তের্জা রিমা রীতি ব্যবহার করেছেন টমাস ওয়াট, জন মিল্টন, লর্ড বায়রন (দান্তের ভাব বাণীতে) এবং পার্সি বাইশে শেলী। বিশ শতকের বেশ কয়েকজন কবিও রীতিটি নিযুক্ত করেছিলেন। এর মধ্যে ডাব্লু. এইচ. ওডেন, অ্যান্ড্রু ক্যানন, টি. এস. এলিয়ট, রবার্ট ফ্রস্ট, এলিজাবেথ জেনিংস, ফিলিপ লারকিন, আর্কিবাল্ড ম্যাকলিশ, জেমস মেরিল, জ্যাকলিন ওশারো, জিজার্ট্রুড শনাকেনবার্গ, ক্লার্ক অ্যাশটন স্মিথ, ডেরেক ওয়ালকোট, উইলিয়াম কার্মস এবং উইলিয়াম কারসিল। এডওয়ার্ড লোবারির রীতিটি ছয়টি অক্ষরেখার লাইনে রূপান্তরকরণের নামকরণ করা হয়েছে পিককোলা তেরজা রিমা।
রবার্ট পিনস্কির ইনফার্নো সংস্করণ এবং লরেন্স বিনিয়েনস, ডরোথি এল সায়ারস এবং পিটার ডেলের পুরো কাজের সংস্করণ সহ ডিভাইন কমেডি অনুবাদগুলিতে এই রীতিটি ব্যবহার করা হয়েছে।
#তের্জা রিমা (বা টের্জা রাইমা) রীতির সনেটের বৈশিষ্ট্যঃ-
★ তের্জা রিমা হল একটি তিন লাইন/পঙক্তির স্তবকের অন্ত্যমিল রীতি। অর্থাৎ এখানে তিন লাইন/পঙক্তি মিলে একটি করে স্তবক গঠিত হয়। স্তবক বিন্যাস নিম্নরূপঃ
৩+৩+৩+৩+২/৩+৩+৩+৩+১
★ এখানে প্রথম লাইন/পঙক্তির শেষের সাথে তৃতীয় লাইন/পঙক্তির মিল থাকে। আবার দ্বিতীয় লাইন/পঙক্তির সাথে চতুর্থ ও ষষ্ঠ লাইন/পঙক্তির মিল থাকে। এভাবে পঞ্চম লাইন/পঙক্তির সাথে সপ্তম ও নবম লাইন/পঙক্তির, অষ্টম লাইন/পঙক্তির সাথে দশম ও দ্বাদশ লাইন/পঙক্তির, একাদশ লাইন/পঙক্তির সাথে ত্রয়োদশ ও চতু্র্দশ লাইন/পঙক্তির মিল থাকে।
★ এ রীতিতে লাইন/পঙক্তি সংখ্যার কোনও সীমা নেই, তবে তের্জা রিমা রীতিতে রচিত কবিতার বিভাগগুলি একটি একক লাইন/পঙক্তি কিংবা একটি দ্বিপদীকার মাধ্যমে চূড়ান্ত স্তবকের মাঝের লাইন/পঙক্তির মিলটি পুনরাবৃত্তি করে শেষ হয়।
উপরের উদাহরণের জন্য দুটি সম্ভাব্য শেষ হ'ল DED E বা DED EE তের্জা রিমার জন্য কোনও সেট ছন্দ নেই, তবে ইংরেজিতে পাঁচ মাত্রার চরণ সাধারণত পছন্দ করা হয়।
★ এ রীতির সনেটের অন্ত্যমিল নিম্নরূপঃ
ABA, BCB, CDC, DED : E/কখক,খগখ,গঘগ,ঘঙঘ : ঙ
অথবা
ABA, BCB, CDC, DED : EE/কখক,খগখ,গঘগ,ঘঙঘ : ঙঙ
#তের্জা রিমা (Terza Rima) বা টের্জা রাইমা সনেটের উদাহরণঃ-
★1.
• {Ode to the West Wind -1/Percy Bysshe Shelley}
O wild West Wind, thou breath of Autumn's being, (A)
Thou, from whose unseen presence the leaves dead (B)
Are driven, like ghosts from an enchanter fleeing, (A)
Yellow, and black, and pale, and hectic red, (B)
Pestilence-stricken multitudes: O thou, (C)
Who chariotest to their dark wintery bed (B)
The winged seeds, where they lie cold and low, (C)
Each like a corpse within its grave, until (D)
Thine azure sister of the Spring shall blow (C)
Her clarion o'er the dreaming earth, and fill (D)
(Driving sweet buds like flocks to feed in air) (E)
With living hues and odours plain and hill: (D)
Wild Spirit, which art moving everywhere; (E)
Destroyer and preserver; hear, oh, hear! (E)
[এখানে অন্ত্যমিলঃ ABA BCB, CDC, DED : EE]
★2.
• {Acquainted with the Night/Robert Frost}
I have been one acquainted with the night. A
I have walked out in rain — and back in rain. B
I have outwalked the furthest city light. A
I have looked down the saddest city lane. B
I have passed by the watchman on his beat C
And dropped my eyes, unwilling to explain. B
I have stood still and stopped the sound of feet C
When far away an interrupted cry D
Came over houses from another street, C
But not to call me back or say good-bye; D
And further still at an unearthly height, E
One luminary clock against the sky D
Proclaimed the time was neither wrong nor right. E
I have been one acquainted with the night. E
[এখানে অন্ত্যমিলঃ ABA BCB, CDC, DED : EE]
#বাংলা সাহিত্যে তের্জা রিমা (বা টের্জা রাইমা) সনেট/চতুর্দশপদী কবিতাঃ-
বাংলা সাহিত্যে তের্জা রিমা (বা টের্জা রাইমা) রীতি প্রসার ঘটতে পারেনি। মাত্র গুটি কয়েক কবিতায় এ রীতির প্রতিফলন দেখা যায়। জীবনানন্দ দাশ তার ২৬ মাত্রার 'শকুন' কবিতাটিতে এ রীতিতে প্রতিফলন ঘটান। এছাড়াও কবি বুদ্ধদেব বসুর 'ঋতুর উত্তরে', অজিত দত্তের 'রাঙ্গাসন্ধ্যা' কবিতায় তের্জা রিমা রীতির প্রতিফলন দেখা যায়।
#বাংলা সাহিত্যের তের্জা রিমা (বা টের্জা রাইমা) সনেটের উদাহরণঃ-
★১.
• ১৮ মাত্রায় তের্জা রিমা রীতিতে লেখা রজত দত্তের 'রাঙাসন্ধ্যা' সনেট/চতুর্দশপদী কবিতাটি উল্লেখ করা হলোঃ
রাঙা সন্ধ্যার স্তব্ধ আকাশ কাঁপায়ে পাখার ঘায় ক
ডানা মেলে দুরে উড়ে চলে যায় দুটি কম্পিত কথা, খ
রাঙা সন্ধ্যার বহ্নির পানে দুটি কথা উড়ে যায়। ক
পাখার শবদে কাঁপে হৃদয়ের প্রস্তর-স্তব্ধতা, খ
দূর হতে দূর—তবু কানে বাজে সে পাখার স্পন্দন, গ
ক্ষীণ হতে ক্ষীণ, ঝড়ের মতন তবু তার মত্ততা। খ
চলে যায় তারা চোখের আড়ালে, লক্ষ কথার বন গ
অট্টহাস্যে কোলাহল করে, তবু ভেসে আসে কানে ঘ
পাখার ঝাপট, বজ্র ছাপায়ে এ কি অলিগুঞ্জন? গ
যাযাবর যত পক্ষী-মিথুন আসে তারা কোনখানে? ঘ
মানুষের ছায়া সে আলোর নিচে পড়েছে কি কোনদিন? ঙ
তুমি ত আমারে ভুলে যাবে নাকো যাই যদি সন্ধানে? ঘ
তুমি নীড়, তুমি উষ্ণকোমল, পাখার শব্দ ক্ষীণ। চ
তবু সে আমাকে ডাকে, ডাকে শুধু ছেদহীণ ক্ষমাহীণ।। চ
(রাঙাসন্ধ্যা/অজিত দত্ত)
{স্তবক সংখ্যাঃ ৩+৩+৩+২}
[অন্ত্যমিলঃ কখক : খগখ : গঘগ : ঘঙঘ : চচ]
★২.
• ২৬ মাত্রার তের্জা রিমা (বা টের্জা রাইমা) রীতিতে লেখা জীবনানন্দ দাশের 'শকুন' সনেট/চতুর্দশপদী কবিতাটি উল্লেখ করা হলোঃ
মাঠ থেকে মাঠে মাঠে | —সমস্ত দুপুর ভরে | এশিয়ার আকাশে আকাশে ক
শকুনেরা চরিতেছে; | মানুষ দেখেছে হাট | ঘাঁটি বস্তি —নিস্তব্ধ প্রান্তর খ
শকুনের; যেখানে মা|ঠের দৃঢ় নীরবতা | দাঁড়ায়েছে আকাশের পাশে ক
আরেক আকাশ যেন | —সেইখানে শকুনেরা | একবার নামে পরস্পর খ
কঠিন মেঘের থেকে | —যেন দূর আলো ছেড়ে | ধুম্র ক্লান্ত দিক্হস্তিগণ গ
পড়ে গেছে —পড়ে গেছে | পৃথিবীতে এশিয়ার | ক্ষেত মাঠ প্রান্তরের ‘পর খ
এই সব ত্যক্ত পাখি | কয়েক মুহুর্তে শুধু | —আবার করিছে আরোহণ গ
আঁধার বিশাল ডানা | পাম গাছে —পাহাড়র | শিঙে শিঙে সমুদ্রের পারে; ঘ
একবার পৃথিবীর | শোভা দেখে —বোম্বায়ের | সাগরের জাহাজ কখন গ
বন্দরের অন্ধকারে | ভিড় করে, দেখে তাই | —একবার স্নিগ্ধ মালাবারে ঘ
উড়ে যায় —কোন এক | মিনারের বিমর্ষ কি|নার ঘিরে অনেক শকুন ঙ
পৃথিবীর পাখিদের | ভুলে গিয়ে চলে যায় | যেন কোন মৃত্যুর ওপারে; ঘ
যেন কোন বৈতরণী | অথবা এ জীবনের | বিচ্ছেদের বিষন্ন লেগুন চ
কেঁদে ওঠে…চেয়ে দেখে | কখন গভীর নীলে | মিশে গেছে সেই সব হূন। চ
(শকুন/জীবনানন্দ দাশ)
{পর্ব বিন্যাসঃ ৮+৮+১০; স্তবক সংখ্যাঃ ৩+৩+৩+২}
[অন্ত্যমিলঃ কখক : খগখ : গঘগ : ঘঙঘ : চচ]
----★★----
▪ কার্টাল (Curtal Sonnet) সনেটঃ-
'কার্টাল সনেট' হলো জেরার্ড ম্যানলি হপকিন্স( ১৮৪৪-১৮৮৯) কর্তৃক আবিষ্কৃত সনেটের একটি রীতি।
কার্টাল সনেটটি সনেট কবিতার দশ এবং দেড় লাইন/পঙক্তির বৈশিষ্ট্যযুক্ত। কার্টাল সনেটকে নিয়মিত সনেটের মতো দীর্ঘ হিসাবে বিবেচনা করা হয় না। অন্য কথায় প্রথম 8 টি লাইন/পঙক্তি কার্টাল সনেটে 6 টি লাইন/পঙক্তিতে পুনর্গঠিত হয় এবং শেষ 6 টি লাইন/পঙক্তি সাড়ে চারটি লাইন/পঙক্তিতে পুনর্গঠিত হয়। কার্টাল সনেট পেত্রার্কীয় সনেট কী হবে তার তিন চতুর্থাংশ। কার্টাল সনেটকে সংক্ষিপ্ত গঠন এবং শৈলীর কারণে তাকে চুক্তিবদ্ধ সনেটও বলা হয়।
কিছু কবি বিশেষজ্ঞরা দৈর্ঘ্য হ্রাসের কারণে কার্টাল সনেটকে সনেটের প্রকৃত রূপ হিসাবে বিবেচনা করেন না। তবে কার্টাল সনেটের গঠন এবং রীতির কারণে একে বৈধতা দিতে বাধ্য।
হপকিনস তার কবিতাগুলির (১৮৭৬-১৮৮৯) প্রবন্ধে পেত্রার্কীয় এবং কার্টাল সনেটগুলির মধ্যে গাণিতিকভাবে সম্পর্কের বর্ণনা দিয়েছেনঃ
যদি পেত্রার্কীয় সনেটটি 8 + 6 = 14 সমীকরণ দ্বারা বর্ণনা করা যায় তবে তিনি বলেছেন, কার্টাল সনেটটি হ'লঃ
{প্রদর্শন শৈলী {12 \ভাগ 2} + {9 \ভাগ 2} = {21 \ভাগ 2} = 10 {1 \ 2}}
হপকিন্সের এই রীতির উদাহরণ হলো তার "পেইড বিউটি", "পিস" এবং "অ্যাশ বুস"কবিতাগুলি।
#কার্টাল রীতির সনেটের বৈশিষ্ট্যঃ-
★ এটি এগারো লাইন/পঙক্তির সনেট। আরও নির্ভুলভাবে বলতে গেলে, সাড়ে দশ-লাইনের সনেট।
অর্থাৎ এতে দশ লাইন/পঙক্তি পূর্ণ এবং শেষের লাইন/পঙক্তি অর্ধেক থাকে।
★ এ রীতির সনেট দুটি ভাগে বিভক্ত। একটি সনেটের 'অষ্টক' এখানে 'ষটকে' পরিণত হয় এবং একটি সনেটের 'ষটক' এখানে 'চতুষ্কে' (এর সাথে অতিরিক্ত একটি লেজ বা টুকরা" থাকে) পরিনত হয়। অর্থাৎ একটি সনেটের প্রথম আটটি লাইন/পঙক্তিকে কার্টাল সনেটের প্রথম ছয় লাইন/পঙক্তিতে অনুবাদ করা হয় এবং সনেটের শেষ ছয় লাইন/পঙক্তিকে একটি কার্টাল সনেটের শেষ সাড়ে চার লাইন/পঙক্তিতে অনুবাদ করা হয়।
হপকিন্স শেষ লাইন/পঙক্তিকে অর্ধেক লাইন/পঙক্তি হিসাবে বর্ণনা করেন, যদিও বাস্তবে এটি হপকিন্সের স্ট্যান্ডার্ড লাইন/পঙক্তির অর্ধেকের চেয়ে কম হতে পারে।
★ এ রীতির সনেটের অন্ত্যমিল নিম্নরূপঃ
ABCABC DCBDC or ABCABC DBCDC/কখগকখগ ঘগখঘগ অথবা কখগকখগ ঘখগঘগ
অর্থাৎ
Line 1: A
Line 2: B
Line 3: C
Line 4: A
Line 5: B
Line 6: C
Line 7: D
Line 8: B
Line 9: C
Line 10: D
Line 11: C
অথবা
Line 1: A
Line 2: B
Line 3: C
Line 4: A
Line 5: B
Line 6: C
Line 7: D
Line 8: C
Line 9: B
Line 10: D
Line 11: C
#কার্টাল রীতির সনেটের উদাহরণঃ-
★1.
• {Pied Beauty/Gerard Manley Hopkins}
Glory be to God for dappled things— A
For skies of couple-colour as a brinded cow; B
For rose-moles all in stipple upon trout that swim; C
Fresh-firecoal chestnut-falls; finches' wings; A
Landscape plotted and pieced—fold, fallow, and plough; B
And all trades, their gear and tackle and trim. C
All things counter, original, spare, strange; D
Whatever is fickle, freckled (who knows how?) B
With swift, slow; sweet, sour; adazzle, dim; C
He fathers-forth whose beauty is past change: D
Praise him. C
[এখানে অন্ত্যমিলঃ ABCABC DBCDC]
★2.
• {Spring/Gerard Manley}
Praise for this sense of what is to come A
this feeling that somebody's out there B
scattering fresh blooms to the midnight breeze C
permeating the darkness with scent - it's won A
my praise each year - made me believe and dare B
to anticipate times when the heart is at ease. C
Each time is like the first- it's a genius I want to hold, D
make a firm fist of my hand - does appease C
that obsession to own the magnolia's flare B
and the lilac's scent, when spring grows old, D
to summer cedes. C
[এখানে অন্ত্যমিলঃ ABCABC DCBDC]
★3
• {Memorial service /Dainy hine}
Rain which washes stone and freshens wreaths A
might level older vets like sniper fire. B
Umbrellas, speedily deployed, volley C
voluble pigeons into balcony seats. A
The sun jabs cloud like a farmer forking mire B
occluded by a crust of melancholy. C
Pigeons in 'the gods' have much to say: D
on feathered wings and naked arms; on choirs; B
on human waywardness; on pigeon folly. C
Now and then, just for a laugh they play D
Where's Wally? C
[এখানে অন্ত্যমিলঃ ABCABC DBCDC]
---★★----
▪ আধুনিক (Modern Sonnet) সনেটঃ-
সনেট বলতে সাধারণত সনেটের আদর্শ খ্যাত 'ইংরেজী' এবং 'পেত্রার্কীয়' সনেটের মূল রূপ দুটি বোঝায়।
কিছু আধুনিক কবি এখনও সনাতন পদ্ধতিতে সনেট লিখলেও অনেক আধুনিক কবি সনাতন পদ্ধতি অনুসরণ করেন না।
বিংশ শতাব্দীতে (১৯০০-২০০০) এডনা সেন্ট ভিনসেন্ট মিলি (১৮৯২-১৯৫০), রবার্ট লোয়েল (১৯১৭-১৯৭৭) ডাব্লু এইচ অডেন (১৯০৭-১৯৭৩), এডাম কির্শ্চ (১৯৭৬-) তাদের নিজস্ব প্রকরণ তৈরি করে সনেটের ধারার ব্যবহার এবং বিকাশ অব্যাহত রেখেছেন।
এই আধুনিক প্রকরণগুলি ইতালীয় এবং ইংরেজি সনেটগুলির মধ্যে পার্থক্যের চেয়ে বেশি চরম। আধুনিক কবিরা অমিত্রাক্ষর সনেট, "উল্টানো" সনেট লিখেছেন, যাতে অষ্টকের আগে ষটক থাকে এবং অসাধারণ অন্ত্যমিল পদ্ধতি রয়েছে।
সমসাময়িক কবিরা সনেটের রীতির প্রসার অব্যাহত রেখেছেন,
আধুনিক সনেটগুলি একটি নির্দিষ্ট রীতি বা ধারা মেনে চলে না। আসলে, আধুনিক সনেটকে সনাতন পদ্বতির সনেটগুলির একটি "ভুতের ছাপ" বলা যেতে পারে।
#আধুনিক সনেটের বৈশিষ্ট্যঃ-
আধুনিক সনেটে তেমন ধরাবাঁধা নিয়ম নেই তবে নিচের কথাগুলো বলা যেতেই পারেঃ
★ আধুনিক সনেটে দ্বিমাত্রিক পর্ব, চতুর্মাত্রিক চরণ, ফাঁকা স্তবক এবং
AABB CCDD EEFF GG
বা ABBA CDDC EFFE GHHG
এর মতো বিভিন্ন পদ্বতির অন্ত্যমিল রয়েছে।
★আধুনিক সনেট কখনও কখনও প্রচলিত চৌদ্দ লাইন/পঙক্তি নিয়ম অনুসরণ করে; আবার কখনও কখনও তা অনূসরণ করে না। এতে লাইন/পঙক্তি সংখ্যা বৃদ্ধি পেতেও পারে।
★ আধুনিক সনেটে সনাতন পদ্ধতির সনেটের মতো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। আধুনিক কবিরা একে অনেকদূর প্রসারিত করেছেন।
#আধুনিক সনেটের উদাহরণঃ-
আধুনিক সনেটের জন্য আরও ভাল ধারনা পেতে, অ্যাডাম কির্শ্চের (১৯৭৬- ) "Professional Middle-class Couple, 1927" যা আ আধুনিক সনেটগুলি পড়ার সময় আপনাকে কী দেখার উচিত তা দেখাবে।
• A Modern Sonnet:
{“Professional Middle-Class Couple, 1927,”/Adam Kirsch}
What justifies the inequality A
That issues her a tastefully square-cut B
Ruby for her finger, him a suit B
Whose rumpled, unemphatic dignity A
Declares a life of working sitting down, C
While someone in a sweatshop has to squint D
And palsy sewing, and a continent D
Sheds blood to pry the gemstone from the ground, C
Could not be justice. Nothing but the use E
To which they put prosperity can speak F
In their defense: the faces money makes, F
They demonstrate, don’t have to be obtuse, E
Entitled, vapid, arrogantly strong; G
Only among the burghers do you find H
A glance so frank, engaging, and refined, H
So tentative, so conscious of its wrong. G
{অন্ত্যমিলঃ ABBACDDC EFFEGHHG}
[এখানে স্তবক বিন্যাসঃ ৮+৮, পঙক্তিঃ ১৬]
• কির্শ্চে'র আধুনিক সনেট পেত্রার্কীয় রীতিতে সাজানো হয়েছে। এটি একটি অষ্টক দিয়ে শুরু হয়েছে় যা বেশিরভাগভাবে (অনিয়মিতভাবে) ABBAABBA মিল পদ্ধতি অনুসরণ করেছে। তবে এটি ষটকের CDCCDC বা CDECDE অন্ত্যমিল পদ্ধতি অনুসরণ না করে এটি অন্য একটি অষ্টক দিয়ে শেষ হয়েছে। যা অনিয়মিতভাবে ABBAABBA অন্ত্যমিল পদ্বতি অনুসরণ করে।
এটি একটি ছোট পরিবর্তন যা সনেট রীতিটিকে তাজা এবং নতুন করে তুলতে চেষ্টা করে। প্রকৃতপক্ষে, কির্শ্চের সনেট আরেকটি অস্বাভাবিক ধরণের সনেটের উদাহরণঃ প্রসারিত সনেট, যা ১৬ বা ততোধিক লাইনে প্রসারিত সনেটকে বোঝায়।
কির্শ্চে'র সনেট রোমান্টিক প্রেমের বয়সের পুরানো বিষয়ের উপরে একটি আধুনিক ঘূর্ণন রাখে। সনেটের শিরোনামটি একটি "পেশাদার মধ্যবিত্ত দম্পতি" বোঝায়। লোকেরা সাধারণত ধরে নেয় যে একটি "দম্পতি" হ'ল দুটি ব্যক্তি যারা প্রেমে পড়েছেন। তবে এই কবিতাটি অন্য দিক দিয়ে চলেছে।
কির্শ্চ প্রথম অষ্টকটিতে এই দম্পতির উপস্থিতি সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন এমন প্রতিটি আইটেমের জন্য - একটি দৈত্য রত্নপাথরের একটি আংটি, একটি কুঁচকানো স্যুট - তিনি অন্যায় শ্রম পরিস্থিতি সম্বোধন করেছেন যা তাদেরকে সম্ভব করেছে। সুতরাং, যেমনটি গতানুগতিক সনেটগুলিতে, কির্শ্চ একটি প্রস্তাব দিয়ে শুরু করে: মধ্যবিত্ত দম্পতির সমৃদ্ধির প্রদর্শন অন্যের ব্যয়েই আসে।
দ্বিতীয় অষ্টকটির শুরুতে মেজাজ বদলের (ভোল্টা) পরে, কির্শ্চ মধ্যবিত্ত দম্পতিকে মুক্ত করতে পারে এমন একমাত্র বিষয় বর্ণনা করেছেনঃ তাদের সমৃদ্ধির অন্বেষণ অন্যদেরকে যেভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে এবং অস্বীকার করেছে সেগুলি স্বীকার করে এবং ভবিষ্যতে কীভাবে তারা তাদের সমৃদ্ধি ব্যবহার করে তা পরিবর্তন করে।
এবার আর একটি আধুনিক সনেটের উদাহরণ দেওয়া যাকঃ
• A Modern Sonnet:
{“Harlem Hopscotch”/Maya Angelou}
One foot down, then hop! It’s hot. A
Good things for the ones that’s got. A
Another jump, now to the left. B
Everybody for hisself. B
In the air, now both feet down. C
Since you black, don’t stick around. C
Food is gone, the rent is due, D
Curse and cry and then jump two. D
All the people out of work, E
Hold for three, then twist and jerk. E
Cross the line, they count you out. F
That’s what hopping’s all about. F
Both feet flat, the game is done. G
They think I lost. I think I won. G
(অন্ত্যমিলঃ AABB CCDD EEFF GG)
[এখানে স্তবক বিন্যাসঃ৪+৪+৪+২]
• এটি সনেটের একটি আকর্ষণীয় উদাহরণ যা মায়া অ্যাঞ্জেলো (১৯২৮-২০১৪) একটি আধুনিক উপায়ে পরিবর্তন করেছেন।
একে সনেট বলা হচ্ছে কারণ এতে তিনটি চতুষ্ক স্তবক রয়েছে এবং একটি চূড়ান্ত দ্বিপদীকা রয়েছে, যথাযথ অন্ত্যমিল রয়েছে এবং এমনকি সনেটের পঙক্তির সংখ্যাও সীমাবদ্ধ রয়েছ। সবগুলো বিষয় বিবেচনা করলে একে একটি সনেট বলতেই হয়।
#বাংলা সাহিত্যে আধুনিক সনেটঃ-
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সনেটের আদর্শ খ্যাত দুই রীতির বাহিরে এসে কক,খখ,গগ,ঘঘ,ঙঙ,চচ,ছছ রীতিতে বহু 'আধুনিক সনেট' রচনা করেছেন। তার সনেট রচনার উদাহরণ আছে নৈবেদ্য, উৎসর্গ, গীতালি প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থে। রবীন্দ্রোত্তর বাংলা সাহিত্যের আধুনিক পর্বে সনেট রচনায় কৃতিত্ব দেখিয়েছেন মোহিতলাল মজুমদার, সুধীনন্দ্রনাথ দত্ত, অমিয় চক্রবর্তী, অজিত দত্ত, বদ্ধদেব বসু, বিষ্ণু দে প্রমুখ খ্যাতিমান কবি।
নিচে এমন সনেট/চতুর্দশপদী কবিতা উল্লেখ করা হলোঃ
ব্যথাক্ষত মোর প্রাণ | লয়ে তব ঘরে ক
অতিথিবৎসলা নদী | কত স্নেহভরে ক
শুশ্রূষা করিলে আজি-- | স্নিগ্ধ হস্তখানি খ
দগ্ধ হৃদয়ের মাঝে | সুধা দিল আনি। খ
সায়াহ্ন আসিল নামি, | পশ্চিমের তীরে গ
ধান্যক্ষেত্রে রক্তরবি | অস্ত গেল ধীরে। গ
পূর্বতীরে গ্রাম বন | নাহি যায় দেখা, ঘ
জ্বলন্ত দিগন্তে শুধু | মসীপুঞ্জরেখা; ঘ
সেথা অন্ধকার হতে | আনিছে সমীর ঙ
কর্ম-অবসান-ধ্বনি | অজ্ঞাত পল্লীর। ঙ
দুই তীর হতে তুলি | দুই শান্তিপাখা চ
আমারে বুকের মাঝে | দিলে তুমি ঢাকা। চ
চুপি চুপি বলি দিলে, | "বৎস, জেনো সার, ছ
সুখ দুঃখ বাহিরের, | শান্তি সে আত্মার।" ছ
(শুশ্রূষা: চৈতালি/রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)
{পর্ব বিন্যাসঃ ৮+৬}
[অন্ত্যমিলঃ কক,খখ,গগ,ঘঘ,ঙঙ,চচ,ছছ]
-----★★★-----
→চলবে...