আমি রই তাকিয়ে সমুখের পানে
অটল নয়নে ঋজু শরীরে
অতীব শক্ত এক অচেনা
মন ও মনন সিক্ত গত বর্ষণে ।
আঁধার বেড়ে চলে উৎসবে
মাতে ঘরের কোনে তেলাপোকা
আর একটি ছোট ইঁদুর
দিনমান দাপাদাপি ছোটাছুটি
এ পরিবারের আরও একজনের মতন
ছোট্ট আকাশ যায় দেখা মাটিতে
শুয়ে, কি কষ্ট ,কি কষ্ট ,হারিয়েছি
সুবিশাল আকাশ এইতো সেদিন
চারিদিকে দুর্মুখ, শয়তানের
আহাজারিতে বাতাস বিব্রত
পেরিয়ে বড় সড়ক কদাচিৎ ভ্রমে
ঢোকে এ গলির ভিতরে
পেঁজা মেঘ হারায়ে অহংকার
এক লহমার দেখা দিয়ে ধায়
আশ্বিনের শেষ প্রান্তে ।
আমার শুধু অভাব বোধ হয়
ছাতিমের ঘ্রান ,শেফালীর
প্রাতঃকালীন নিঃষ্কাম পরশ ।
আসাদ অ্যাভেন্যুর তীব্র ভালবাসার
দীর্ঘ কেশরাজির বৃক্ষ তুলে ধরে
অন্তর্বাস ডাকে সন্তর্পণে
আমি হারাই ক্ষণিক
মেদবহুল স্তনের আবরনে
ভয় হয় ,কেবা কখন দেয় হাত
উন্নয়ন আর সংস্কারের নামে
যদি কাটে প্রেমিকার তাবৎ অঙ্গমালা
রাজাদের নির্দেশে !
আমি মরে যাবো মরে যাবো
তোমাদের সংস্কারের কুঠোরে ।
রমজানের সংযমে রাস্তার দুধার
ভরে তেলেভাজার স্তুপ সংহত
কিতাবের বানী কিতাবে জমা রেখে
পেট ভরে ঠেসে যায় যতটুকুন ধরে উদরে
বাজারে বসে খাদ্য বেচে তিন চার
গুন বেশী দামে বরকতের আশাতে ।
কাফিরেরা হবে ভালো বোধকরি
এইসব শুয়োরের চেয়ে
ফেরেশতারা পালিয়েছে বঙ্গভুমি ছেড়ে
সাথে পরাভূত শয়তান বলে
গেছি ফেঁসে এইদেশে এসে
এদের থেকে বড় শয়তান
নেই নিকট ব্রহ্মাণ্ডে ।
সেই দুই নারী দুজনের সময়ে অকারনে
লাগাতার সংসদ বর্জনকারী
নিয়েছে ঠাই পাশাপাশি
বিলাসবহুল কারাগারে গরীবের দেশে
নদী সিকস্তির দেশে মানুষের
মতামত বোঝা বড় দায়
এই বলে পোরো জেলে
আবার বলে দাওগো ছেড়ে ।
মগের মুল্লুক এরেই বুঝি কয়
এসে দেখে যাও তিন উদ্দিনের
তাল ছন্দ লয় ।
আনন্দের রেশ দেখা গেল এবার
নগরের বিকিকিনির হাটে
কি ধন কি নির্ধন যার সাধ্য মতো
কিনে নিলো বস্ত্র পাদুকা খুশী ভরা মনে ।
বন্যার আক্রোশ সেই সব গায়ে
ঢেলেছে অঢেল বালু ,চিক চিক রাজি
রুধেছে আনন্দ এইবার খুশীর দিনে
সেমাইয়ের ঈদ সেমাইবিহীন সুখহীন
ফ্যাল ফ্যাল চেয়ে থাকা অবুঝ শিশু
পিতা তার গিয়েছিলো ঢাকার শহরে
আরও বেশী রোজগারের আশাতে
ফেরেনি চাঁদরাত অবধি বাস ভাড়ার অভাবে
আনন্দের ভাগাভাগিতে কৃপণ মুসলিম
শরিয়তি মারপ্যাঁচে বেহেস্ত রচে গৃহকোনে
মারেফতি কায়দায় দুখিজন গায়
দেহঘড়ি ও তার মেকারের গীত ।
অনিচ্ছার নামাবলী চাপিয়ে দেয়
জবরদস্তি আমার শরীরে
অসহনীয় খাদ্যসামগ্রী ভিড় করে টেবিলে
তাবৎ ইচ্ছা ঝাড়ুর মাথায় চলে যায়
ট্রাশ প্যানে এবং রাস্তায় ময়লার সংগ্রহে।
চারিদিক শীতল হাওয়ায় হয়ে গেল নিশ্চল
বঙ্গোপসাগরে উঠেছে অসময়ের ঝড়
কার্তিকের কাশফুল নুয়ে গেল
অঝোর ধারায় পতিত রাতভর বরষণ এর তোড়ে
হৃত যৌবন কাশ আর রয়না ফুল্লেল ফুলে
এই কার্তিকে আর হবেনা দেখা ফুলের দোলা ।
এক বস্ত্রে সুখী যারা রয় তা চিরদিন
শত বস্ত্রেও খুশী নয় তারা সুখী নয় কোনদিন
অর্থ দিয়ে যায়না কেনা সুখ ও আনন্দ
অর্থ বিনে ওরা কারা গায় গান নিত্যানন্দ !
আধুনিক ওঠে পৌরাণিকের ভিত্তির পরতে
পৌরাণিকে অস্বীকার ধ্বংস এনে দেবে
আত্নপরিচয় , আত্নগ্লানি , আত্নজ সমাচার
ক্রমে এই সকল নিতেছে ঠাই ইতিহাসের পাতায় ।
পশ্চিম আমাদের কৃষ্টির বিনাশে
সাজিয়েছে অঢেল প্রযুক্তি
সার্থক তারা কোথাও কখনো কোথাও আপাতঃ ব্যার্থ
দেশজ ভাবটি উঠেছে জেগে মধ্যবিত্তের চৌকাঠে
দাঁড়িপাল্লায় বসা সিন্ডিকেটেড বুদ্ধিজীবী জেনো
দড়ি ছিঁড়ে পতিত হতে সময় লাগেনা তত
নাগরিক সত্ত্বার রশি দেশকল্পের ভাবধারা
ছেড়ে দিয়ে বসেছে পাল্লায় কার ভাবের ওজন ক’ কেজি
শারদীয় উৎসবের ছটা চারিদিকে
দুর্গা সমাসীন ব্যাঘ্র পৃষ্ঠে
অসুর কম্পমান বর্শার আঘাতে
কল্যান হোক দশভুজার ঝিলিকে
মাটি উর্বর হোক , ফসল পুষ্ট হোক
ধরণী শান্ত হোক , মানবের শান্তি হোক
কল্যানীয়া প্রসাদ তুলে ধরে মুখসন্মুখে
আমি আবেগে বলি যদি সব কল্যানীয়া
এভাবেই প্রসাদ তুলে দিত আপামর মানুষের মুখে
কার্তিকের হেমন্তে ফুলের ঘ্রান এসেছে ফিরে
সন্ধ্যার আঁধারে ছুটিতে ফাঁকা এই নগরীতে
কুমারীর লুকানো পুষ্ট অবয়বে
থাকে যে রকম ঘ্রান ঠিক সেরকম
উৎস্যহীন কোনও আঁধারে ঢাকা
ঝোপঝাড় গাছালীর গভীরে নাড়া দেয়
প্রেম ভরা মানুষের মন ও মনন
কার কাছে থোবো না খুজে পাওয়ার অভিমান
কোনও পদ চিন্হ উঁকি দিয়ে গেল মনের আরশীতে
জীবন কি যাবে ফিরে বালুময় মেঠো পথে
হটাত যদি উল্লসিত প্রান হয়ে যায় ম্লান
পিছনে কি গেলাম ফেলে নেই কোনও খতিয়ান
কিছু পুস্তক অযত্ন আর অবহেলায় উইয়ে কাটে
আর কিছু কলম চর্চ্চা ডায়েরীর ফাঁকে ফাঁকে
উত্তরসূরিরা চায় শুধু সহায় ক্যাশ আর ফ্লাটে
কোনও একদিন বেচে দেবে বুকের ধন কেজির দরে
একটি মানুষ ও কি পারবনা গড়তে এই ধরীত্রি পরে ?
সবাই যেন ছুটছে কাছা মেরে
শ্রেষ্ঠ বরাহ হওয়া যায় কোন কৌশল উপায়ে
তাই বুঝি পশ্চিমবাসী বিড়াল কুকুর ভালোবাসে
একটি সবেধন নীলকণ্ঠী ফুটেছিল আমাদের
চারিদেয়ালের মাঝে একটুকরো আকাশের নিচে
আনন্দ ভর করে গেল হেমন্তের শুকনো হাওয়াতে
আকাশ আর নীলকণ্ঠী একাত্নে মেতেছিল একান্তে ।।
০৬ অকটোবর২০০৭