প্রিয় মনোময় !!
ইদানিং তোমাকে খুব অন্যরকম মনে হয় । মনে পড়ে বুঝি ফেলে আসা কৈশোর ,
লাটাইঘুড়ি , ডাংগুলি কিংবা খুনসুটিময় সেই অরন্য দিনগুলির কথা ? দুঃখ করে
লাভ কী বলো ! নাগরিক ফ্যাশনে আবৃত চলমান জীবন । ইচ্ছেমত ছোঁয়া যায়না
স্বপ্নের টাওয়ার । মাধুরীময় চাঁদটাও যখন জোছনার সুধার পেয়ালা
সামনে মেলে ধরে , প্রচণ্ড তৃষ্ণা সত্ত্বেও ব্যস্ততায় তা পান করতে পারিনা ।
কখনও নাগপঞ্চমীতে সুখী হৃদয়ের সমীকরণ করি , তোমার আমার স্বপ্নের ভেতর
সাতপাকে বাঁধা পরে বাঁকি জীবনের উপাখ্যান । ব্যস্ত সময়ের কোলাহল থামলেই
সবাই খোঁজে , একটু নিরাপদ আশ্রয় । কিন্তু , নিয়ন্ত্রনহীন সময় -
পূজারি মনে ও মননে কেবলি বাড়ায় অসম ব্যকুলতা । স্মৃতির পুঁথি
পাঠ করি । অবাধ্য খেলাচ্ছলেই নিজেদের ভাঙি গড়ি বারবার ।
প্রিয় প্রেম ! সেইতো বললে ভালবাসি ---! তবে এত দেরি কেন করলে ? তুমি কী
জানোনা , ইদানিং আমি অনুভূতি - বৈষম্যে দ্বিধান্বিত সারাক্ষণ । নিষেধের কানাকানি
এড়িয়ে রক্ষণশীল আবর্তনে ঘিরে রেখেছি আমার চারপাশ । হাইব্রিড কোন ভাবনার
সেখানে প্রবেশাধিকার নেই । তার চেয়ে চলো , মেঠোপথে হাঁটি , তুমি হও নগরবাউল ,
আমি গ্রামবাউলিনী ! নগর ও গ্রামীন সম্প্রীতির সমন্বয় করে , শাশ্বত ভালবাসার রূপরেখা
প্রণয়ন করি । মননের বৈঠকখানায় ঐতিহ্যের অভিষেক হোক , ফিরে আসুক
পালকি - বেহারার দিন । তুমি যখন ব্যাকুলতা নিয়ে সুরের মূর্ছনা ছড়াবে ---
' বকুল ফুল, বকুল ফুল ,
সোনা দিয়া হাত কানও বান্ধাইলি ----! '
তখন আমার নায়রি মন , বাতাবি কিংবা তেঁতুল ফুলের গন্ধে মেতে , খুঁজে ফিরবে সেই
পরিচিত খেয়াঘাট , পাল তোলা নৌকো আর ধূসর মাটির আদরমাখা মইষাল গীতি ---
'ওকি গাড়িয়াল ভাই ----
কত রবো আমি পন্থের দিকে চাইয়া রে---!! '
তারপর , ভালবাসার আঁচলে এঁকে নেবো দুই হৃদয়ের প্রতিচ্ছবি !!
আমাদের ভালবাসা হবে অমর , অম্লান ও চিরজীবী !