গত ইরি মৌসুমে
যাদেরকে আমি কাজে নিয়েছিলাম;
৭৪ এর দুর্ভিক্ষে আমার বাবা
যে পরিবার গুলোকে সাহায্য করেছিল,
তারাই পুড়িয়ে দিল আমার ঘর, লুট করে নিল
যা কিছু ছিল, বউ, বোন মেয়ে
শেষ সম্বল টুকু।
আমার বাড়িয় দক্ষিনের বটতলায় বসলেই
দেখা যায়, দেখা যায় নদী - ডাকাতীয়া নদী
অজান্তেই হু হু করে কেদে উঠলাম আমি,
সর্বনাশী ডাকাতীয়া, তুই পড়ে থাক একা,
আমি আর থাকব না, হেলান পাল
আর থাকবে না তোর কাছে।
দক্ষিন গোলার ৪ গন্ডা জমি বিক্রি করে
বোন, মেয়েকে পার করে দিয়েছি ওপারে,
আমি পাহারা দেই - গরু বাচুর, পোড়া ভিটা
ফল, বনাদি আর আধা পোড়া বাশ ঝাড়
বউটাও বাপের বাড়ি এখন
সিমান্তের কাচাকাছি;
দাদা যায়নি ৪৭ এ, ৭১ এ বাবা
পাড়া খালি হয়ে গেল ৭৫ এ
আর আমরা যারা থেকে গেলাম
পড়ে থাকলাম মাটি কামড়ে।
কোথায় যাব? কেন যাব?
বাবা, দাদা, জন্মস্হান ফেলে?
ধুলু বালি, এই ডাকাতীয়া ফেলে?
হায়রে ধর্ম! করে দিলি
নিজ দেশেই বাস্থহারা পরবাসি হেলান।
কেউ কেউ খাতির করতে আসে
কেউ আসে ভয় দেখাতে
কেউ কেউ জানতে চায় কবে যাব!
বাপ দাদার ভিটা আর জমিগুলোই
যেন কাল হলো আমার, এই হেলান পালের।
আর পারিনা
আর কাহাতক বুকে পাথর বাধবে হেলান?
সর্বনাশী ডাকাতীয়া, তুই পড়ে থাক একা।
আমিও চলে যাব
এই হেলান পাল আর থাকবে না
ছি তোকে, ছি
সর্বনাশী ডাকাতীয়া, তুই পড়ে থাক একা।
সাহাদত মানিক
১৩ জানুয়ারী ২০১৪