শোবার ঘরের খোলা জানালা দিয়ে
বাবুই পাখির বাসা, তালগাছ, নদীর ওপাড়;
দিগন্ত জোড়া সোনা ফলা আবাদি জমি;
কখনো দোলায় বাতাস, কখনো পানি;
কত দিন দেখি না।

কত দিন দেখি না
মোরগ ডাকা ভোর, ভোরের সোনলী আকাশ
শিশির ভেজা ঘাস, ধূলো বালি কাদা;
নাঙ্গল কাধে দৃঢ় পায়ের কৃষক;
কত দিন দেখি না।

কত দিন দেখি না
ক্লান্ত কোন পথিক, বহুদূর থেকে হেটে আসা;
রুপোলী ছাদের লুকোছুরি, বর্‌ষায় ডাকাতীয়া,
খেয়া ঘাট, মাঝি, মাঝির সেই গুন টানা নৌকা;
কত দিন দেখি না।

কত দিন দেখি না
ধূলো উড়া পায়ে চলার পথ, বটগাছ
দো‘তারা হাতে অচেনা কোনো বাউল;
সেই চির চেনা জুনাব আলী, হেলান পাল
কত দিন দেখি না।

কত দিন দেখি না
শুভেচ্ছা সিক্ত আশিরবাদের হাত;
বাবা, কবরের উপর সদ্য ফোটা রক্তজবা।
কিংবা একলা বাড়ীর জনমানবহীন
রহস্য ভরা পরিপাটি উঠোন, পুকুর ঘাট;
কত দিন দেখি না।

কত দিন দেখি না
গোয়াল বাচুর, জেলে পাড়ার ভাসান,
একটু দুরে বাঁকটি ধরে হারিয়ে যাওয়া নদী,
প্রশন্নপুরের উদাম গায়ে সুখী মানুষগুলো!
কতদিন দেখি না।

কত দিন দেখি না
ডাক ঘরে আমার নামে সুবাসিত কোন চিঠি
অপেক্ষার সেই হাত, প্রিয় কেউ বাড়িয়ে আছে
ভালোবাসা, ভালোবাসায় অনিম অনামিকা
কত দিন দেখি না।

শোবার ঘরের জানালা খুলি
মূসল ধারার বৃষ্টি দেখি, শুধু
কত দিন দেখি না,
বৃষ্টি ধোওয়া সেই নদীটির মূখ!

দ্বীপান্তরে,
মায়ের মত করে, সবই মনে পড়ে যায়!

২০০৭