কতোদিন দেখা হয়নি –
তোমার পথে চলা আমার পথের সাথে!
হয়তো তোমার তরে, সেই নিশ্চল বেলে ঘাসের ফুল
খেলিতো অবাধ হ’য়ে,
ফুল্ল মনে তোমারই অই পাড়ে;
মাথা নুইয়ে, কখনো বা আধশোয়া হ’য়ে থাকা –
তোমারই যে ভাসিত কোলে –
শাদা ফিনফিনে শীর্ণ পাপড়ির দলে
মেঠো সুরের অচেনা গান,
তবুও যে বাতাস ছুঁয়ে যেতো সহসা,
নিয়ে যেতো তোমারই প্রাণ-জলে।
তোমার ধারে আর দেখিনা যে আমি তা’রে –
দেখিনা আর তোমার এই পাড়ে আমারেও!
সর্পিল হ’য়ে আছো তুমি!
বাঁকা পথে মেঠো জলের গন্ধ শুকায়ে গ্যাছে তোমাতেও –
তোমার অজান্তে – তুমি চলিতেছো কার মতো করে –
কেউ তা জানেনা!
কোনো তীরে – আমার পাগলা নদীর পাড়ে
আর খুঁজে পাইনে যে আমি তা’রে!
ভিন জাতি, ভিন দেশী সেই সিমি –
তা’রে আর তোমার মতো করে
আর খুঁজে পাইনে যে আমি!

কতোবার ছেঁড়া পালে পাড়ি দিয়াছি ডিঙা,
তোমারই অই পাড়ে – তুমি তা জানো, তা’র তরে –
সাক্ষ্য যে দিয়াছিলে আমারে;
সে যে আমার ভালোলাগা – ভালবাসার কথা,
তুমিই তো লিখেছিলে সীমানারে ভুলে কতো গাঁথা –
তোমার দু’ধারে জিওল গাছের ছায়ায়
আমার ভিন দেশী মেয়েটারে নিয়ে।

তোমার এ’ পাড় হইতে যখন দেখিতাম তা’রে –
তা’র নাম তুমিই যে বলেছিলে আমারে।
তোমার অই পাড়ের দেশে –
অই পাড়ের কতো কথা তা’র হয়ে –
এখনো যে লিপি হ’য়ে আছে –
ক্ষয়ে গ্যাছে আধমরা অনাবিল বাকলে –
আমার পাড়ের কতো পলাশ, জিওল, শিমুল, পাকুড়ের ডালে!
সব সীমা, সব কুল, সব চেনা দিন –
হারায়েছি আমার পাগলা নদীর পাড়ে!
আজ – বুড়ো হ’য়ে গ্যাছি আমি,
বুড়ো হ’য়ে গেছো তুমি – তা’র মতো করে!