তোমার দুটি চোখে বেঁধে দিই গো তারা
কোন্ দিঘিতে খসে পড়বে
জীর্ণ মাটি ছড়িয়ে তোমার প্রাণ;
পথ হারা শিশু বসে রয়েছে
সোনার ভুবন শিউলি ঝরিছে
তোমার আপন হারা
কত আপন হারা।

পড়বে না, ঝরবে না মোর হাত দুটি গো
তোমার আঁখি নিভিয়ে যাবে নদীর চড়ায় গো।
কোথাকার পুলক রাশি যে খেলে যায়
সন্ধ্যা মুগুর শীতল পেঁচা কোন্ ডালে বায়।
ফুলের সুবাস নিয়ে একাই পড়ে থাকি
ষড়ঋতু ফিরে না আর হিজল বনে বাটি।

কাহার ঐ দেবালয়ে ফুল ফুটেছে,
রাত্রি মধুর সোনায় মাখা কাজল মেখেছে
গান্ধর্ব পর্বতে লুকিয়ে সেই দরিয়া
নিখোঁজ দ্বীপ পাড়ি দিয়ে উজান পেতেছে।
ডালিম গাছের পাতা ঝরে বৃদ্ধ বটের তলে
নিশীথের নিশাচর স্বস্তি তাহার কোলে ঢলে।
সুজন বনের নীরব পাখি এক চির অবুঝ
উড়তে চাইলেও পারে না সে বার্ধক্যের দূত।

কখন তোমায় হারিয়ে আমি হয়েছি যখন পর
নিখিল চন্দ্র ধূর্ত নয়,
রাত্রির গর্ভে আঁচল।
যে রমণী শুধু সেবাই করে তাকে ধরিয়ে দিও,
তাকে গিয়ে একবার প্রণাম করো-
তার মূল্য দেবে কে?
তোমার দুটি চোখ দিও।
গগন ভরা সবুজ আঁখি,
তার চোখে জল
ও এখন ক্ষয় পেয়েছে
সঙ্গমের কোলাহল।

যে জমিতে শুধু পুষ্প ধরে
ধূসর পুষ্কর মাটি
কদম ফুলের পরাগ খেয়ে
ভেসে যায় গুল্ম শাখাটি।
সেখানে খেলে কেন্নু, আসে পরিযায়ী
দর্শনে দেয় কর্ষণ;
জমি পরিপাটি।
আসে সেখানে আগন্তুক, পরজীবী
ওসে নয় যে কাকতাড়ুয়া
সে কৃষকের চোখের মণি।

বাঁকা চাঁদের মরা গাঙে কে পাল তুলেছে
জলের পর জল ঘোলা কে পাকে পড়েছে।
চলিছে অমর তরী কদম ফুল গুছায়ে
যেই কবরে নাম নেই সেটি নতুন সাজায়ে
ভরা রাত্রি লুকিয়ে কাদে;
তোমার পথ চেয়ে।

যাত্রীরা সব ভেবে মরে কোথায় ওদের ঠিকানা
ঝর্নার জল ঝিরিত ঝিরিত
সাদা কালো আস্তানা।
কখন চলে দিবানিশি
   হয়েছে ফুরুত ফারুত
তাদের সন্ধানে আসবে কেউ
    নতুন ভেলায় দুরুত।

নীল সাগরের বুকে জমেছে পাখির পালক
সীমাহীন ঠিকানায় দিয়েছে পাড়ি
যায় ভেসে যায় স্রোতের টানে
অন্ধ নগরীর ভ্রূণে।
মেলেছে স্বপ্নের পাখা
চাঁদের বাড়ি গিয়ে
পাবে সে খুঁজে পাবে তোমার হারানো তারা।