একহাজার বছর হল,
আটকে আছি সুমেরুর বরফ ঝরে
হিমশীতল শৈলে গুহা বানিয়ে
আমি গুনছি সভ্যতার হিসাব
সে কবেকার আমি
অভেদ্য দূর্গশিখরে ছিল মোর বসবাস
দায়িত্ব ছিল মোর উপরে
পৃথিবীর অপর পারে বরফের দেশে
পৌঁছে দিতে।
আমার উপরেই
হ্যাঁ, আমিই সেই দূর্জয় কবুতর
মুখে খত নিয়ে যে পাড়ি দিয়েছিলাম
স্বপ্নের উড়ান মেলে।
হাজার বছর হল আমি উড়েই চলেছি
ছোট্ট ধরটা নিয়ে চোখ মেলেছি
বিশাল পৃথিবীর উপরে।
দেখেছি সিন্ধুর দুর্গম নগরী। ছুঁয়েছি হিন্দুকুশ পর্বতের চূড়া।
বসেছি লোহিত সাগরের মাঝে,
ভেসে চলা জাহাজের বুকে। কোথাও আবার সাহারা
মরুভূমে একপশলা বালির গুড়ো চোখে পড়েছিল।
দিয়েছিল চোখকে অন্ধ করে। খতটা গেল উড়ে।
কি সেই অশেষ যন্ত্রণা।
বৃহৎ সাহারার বুকে খুঁজে চলেছি, অর্ধ শতাব্দী ধরে।
কিন্তু,
শতাব্দীর অর্ধ বৎসর পাড়ি দিয়েও-
আমি এখন দিশেহারা
যখন যেদিকে তাকাই এক অবাক করা মরীচিকা,
হাত কামড়ায়।
অবশেষে খতটা পেলাম আমি
তবে সাহারাতে নয়,
হওয়ার টানে ছুটে ছুয়ে তা পড়েছে
সুমেরুর কনকনে চুড়োয়।
যদিও বা মিলল,
তব মিলল না।
অন্ধ চোখে ইউরোপের মস্ত পাইন গাছের কাটা
আমাকে বিদ্ধ করেছিল,
কখনো শিকারীদের গুলির আঘাত পেরিয়ে
কখনো বা দুষ্প্রাপ্য বাজের ধাবা টপকিয়ে,
পৌঁছে গেলাম,
ইগলুর দেশে।
যেখানে আমার গন্তব্য।
খুঁজেছি তন্য তন্য, বরফের ঝর সরিয়ে, তুষার ধ্বস ছাড়িয়ে খুঁজেছি,
এক টুকরো খতের খোঁজে।
হয়েছে একহাজার বছর হল
পাইনি,
তবুও ছাড়ব না হাল।
কত পিড়ি পরিবর্তিত হয়েছে, কত দুর্গ ভেঙেছে।
দেখেছি বিশ্ব উষ্ণায়নে অর্ধেক বরফ গলতে।
তবুও আমি ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
হিসেব রেখেছি পরবর্তী একহাজার বছরের।
কারণ, আমি এক দুর্জয় দুর্ভেদ্য কবুতর।