আজ হঠাৎ মধ্যরাইতে আমার ঘুম ভাঙ্গিছিনু
শেকল খুলিয়া দরজা সরাইতেই
খালি পায়ে ঝোপে বায়ে জ্বালিয়া মশাল হাতে!
হুমড়ি খেয়ে পড়িল গায়ে
ধরিল মোকে জাপটে ধরিয়া
তার চোখে বিষন্নতার দাগ।
লাল চক্ষু ডাগর করে তাকিয়াছিল
আসিল সে কীভাবে? কিভাবেই তা হল
বলিল সে।
সীমান্ত রক্ষী পেরিয়ে
জ্বলন্ত অঙ্গার মুখে
হাঁপিতে হাঁপিতে আসিল
করিল করুণ প্রার্থনা।
এপারে সবাই গভীর নিদ্রায় শায়িত
ঐ পাড়ে জ্বলিছে লাশের পাহাড়
রক্তে মিশেছে দরিয়া লাল
কয়েকের ভাসিয়া গিয়াছে দরিয়ার গভীর অতলে
কয়েকের দেহ ডিঙিয়া জমিছে লাশের পাহাড়।
সীমান্তের বেড়া ঐ পাড়
পুড়িছে সহস্র বাড়ি
এক যে এক সারি সারি
তাহার ছাই ভস্ম উড়িয়া আসিল
এই পাড়ে
কেউবা তাতে সাজাইল মৃত দেহ
আবার কেউ মাখিল সারা দেহে ওর মতন
আসিল ছুটিয়া ঘুমহীন চোখে
সাহায্যের হাতে।
ষোলো প্রহরে জমেছে চিতা ওর চোখে
মশাল হাতে শুধু দৌড়িয়েছে এপার ওপার
এখন ওর চাই শুধু একটু ঘুম।
জানিনা রুগ্ন বোবা ওপার হতাশ হবে তাই
কিভাবেই তা হবে! কেনই বা করবে!
মশালকে নিভাইয়া চিতা ভস্ম গায়ে
এখন ঘুমোবার সময় নাই।
ওর মশালও যেন রক্ত ঝরাইতেছে
কিন্তু কী বা করিবার আছে;
অঙ্গার পায়ে দেহ পুড়েছে চোখ বা বাদ যায় কীসে?
চোখের আগুনে চিতা ভস্ম নাই বা বোঝাইল সে।
কিন্তু নিভাবার তো কেউ নহে
ওর উপর পড়িছে ভার
বেদনার ঘুমে দুফোঁটা চোখের জল মুছাইতে।
আমি জানি ও পাড়বে।
চিতার আগুন চোখে ঝরাইয়া সাজাইতে ষোলো আনা ঘুম
জানি সে পাড়বে।