সুখের আসনে ঘেরা ময়নামতি
শৈশবের আলোকে মোড়া সময় পারি দিয়ে
               তুমি এখন যৌবনবতী
মোরা ছিলাম কৈশোর যখন
         যখন দড়ি ঘুরেছিলাম সাতপাক
তুমি আমি তখন অপ্রাপ্ত
        যখন মোর সংসারে আসলে
হেঁসেলের চাবি আঁচলে গুছিয়ে
        সংসারের হাল ধরলে
ময়না তখন সবে কাঁচা
      জানতনা রাধবেরাধের কাজ
মায়ের শাড়ির আঁচল ধরে
    শুধু শুনত তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের হাত
মায়ের শাসন কঠোর ভাবে
           সেই যে বদরাগী মেজাজ
কাদত শুধু একা ঘরে
           মোর আসার অপেক্ষায়
ময়না পড়ত আদর করে
        ছোট্ট গোল টিপ
সাজঘরের সেই ভাঙা দর্পণে দেখত
      সাঝবেলার পঞ্চপ্রদীপ।
তুমি ছিলে বেশ চঞ্চলা
    মেলায় যেতে হবে আবদার
নগরদোলায় চড়ে-বসে ভয়ে
     মোকে ধরে যেন কাদবার
অনেক বছর অতিক্রম হল
    তুমি এখন যুবতী
তোমার কোল আলো করে এল
      মোদের সেই খুঁকিটি
প্রসব যাতনায় পেয়েছিলে কষ্ট
     শুধু একটাই আশা
দেখে রেখো মোদের সন্তানটি
     দেখে যাবে শুধু শেষবার।
সন্তান মুখ দর্শন করে নিলে তুমি বিদায়
জীবনের দর্পনে তুমি গেলে
   নিভে গেল পঞ্চপ্রদীপটি
পড়ে রইল মোদের স্মৃতিতে ঘেরা সাজঘর
       আর ভাঙা সেই দর্পণটি।
জীবনের দর্পণে তুমি ঠাঁই হয়ে থাকবে
রয়ে যাবে মোদের ভালবাসার সেই সম্বলটি।