কত অক্ষৌহিনী কথা হয়েছিল তোমাতে আমাতে
পায়ে হেঁটে যদি পৃথিবীর তাবৎ সমুদ্রতট পাড়ি দিতে হয় ততটা
অথবা নীহারিকার মত শত আলোকবর্ষ গননা করে
কিম্বা মহাকাশের মত অসীম শূন্য হিসেব করে

কথা রাজিতে হতে পারত দীর্ঘকায় এক মহাকাব্য অথবা অশেষ এক গীতি আলেখ্য
অথবা চারণ এক কবি লিখে ফেলতে পারতেন সহস্র নিযুত পুঁথি,
হতে পারত অসীম দৈর্ঘের এক আত্মজীবনী কিংবা লক্ষ ক্রোশ লম্বা এক কবিতা,
কি বলেছিলাম আমরা,
কতটা বলেছিলাম,
কতটা গভীর ছিল,
কতটা উবে গিয়েছিল শরতের শিশিরের মত,
কতটা গেঁথেছিল আত্মায়,
কতটা বেদনাদায়ক ছিল,
কতটা বেদনানাশক ছিল,
কতটা অথৈ ছিল,
কতটা নিঃসৃত হয়েছিল,
কতটা বাগযন্ত্রেই মরেছিল,
কি বলেছিলাম আমরা

বলেছিলাম কালো সালোয়ার কামিজ ঝুলিও অঙ্গে,
যেটার শরীরে আঁকা নিরব নক্ষত্ররাজি
বলেছিলাম পটল চেরা নখে দিও কালোর প্রলেপ
আর দু’চোখের মাঝে কালো টিপটি,
নির্জন দিনটিতে যখন আকাশে ছিল না কোন মেঘের চিহ্ন
যখন দখিনা হাওয়া বৈরী নয়
তোমার শক্ত হাতের তালুটি হাতে নিয়ে বলেছিলাম
সীমানা বিহীন নদীর গল্প,
আমাদের কথার মত,
অথবা দক্ষিণডিহির সেই অনন্ত কাহিনী
যা ফুরোয়নি দশ প্রহরেও
অথবা আমাদের শৈশবের ডুবে থাকা ডুকরে ওঠা কান্নার গল্প

পূবে সকাল বেরিয়েছে কি বেরোয়নি,
রাত্রিটা যবে বসে গেছে পশ্চিমে
দুপুর সেজেছে গনগনে রোদে,
পিছু নিয়েছে সন্দিগ্ধ বিকেল,
কথা ফুরোয়নি তখনো, বেয়ে নেমে গেছে সাঁঝে, নির্ঘুম রাত্রিতে,
আর কি বলেছিলাম আমরা?