মেঘ
সেলিনা জাহান
মেঘ,
শুনলাম, তুই নাকি আকাশ বদলাচ্ছিস?
কোন আকাশে যাবি, কার সীমানায়?
সেখানে কি আমার মতো খরা লেগে থাকে?
কত দিন ধরে ফসল বুকে ধরে ঘুমায় না অনুর্বর মাঠ?
কয়টা চাতক তোকে চিঠি লিখেছে, বল তো শুনি?
নাকি, সেখানে
বৃষ্টি বিলাসী রমনীরা উদোম ছাদে রোজ রোজ
মেঘ গায়ে মাখে?
তুই কি তাদের ভিজিয়ে দিবি,
তোর ছাইয়ের মতো রঙে?
নেমে যাবি, ওদের গোপন সিঁড়ি বেয়ে,
অতি রঞ্জিত নীচে?
সেই আকাশটা তোকে জায়গা দেবে তো?
আমার মতো, যতটুকু চাস?
আমি ভাবতাম, একটা আকাশ, আর
আকাশ ভরা তোর যতো ছুটোছুটি সব আমার,
আমার একলার।
আমার জল শুকিয়েই তোর জন্ম, আবার
শুকিয়ে যাওয়া আমাকেই জলজ করিস তুই।
আমরা বিপরীতে থাকি বলে,
দুঃখ, সুখের অনু পরমানু
ভালো খেতে পাই আমাদের আয়নায় ।
আয়নাটা কি নিয়ে যাবি? ভেঙে যায় যদি? জিানিস তো,
কাঁচ, কতোটা যত্নে বাঁচে?
যাবিই যদি, আপোষ করে যা....
তোর ছায়া বিহীন হাটবো আমি রোদের সাথে
অপ্রয়োজনীয় আলাপ সেরে সেরে,
আর তুই তখন ভিন্ন নগরীর ভিন্ন চালে
রিমঝিম ছন্দ তোলায় ভীষণ ব্যস্ত হবি,
আমাকে সব সইতে হবে,
ফাটল ধরা জমির বিলাপ বইতে হবে,
গভীর রাতে কষ্ট দিয়ে জল ছাড়া তোর নাইতে হবে।
তুই তো একটা আকাশ পাবি,
আরেকটা মেঘের সাথে আলিঙ্গনের বাতাস পাবি
আমি তোকে রুখবো কেনো?
চল, তোকে গুছিয়ে দেই,
জল মেখে তোর ভেজা দুপুর
সাজিয়ে নেই...
আবার যদি দেখতে চাস এক রাত্তিরে
ঘুম ভাঙিয়ে ভীষণ বজ্রপাতে?........