পোগলদিঘা!
মোর প্রিয় জন্মভূমি
সূবর্ণখালীর অমিয়ধারা
চরণ গিয়াছে চুমি।
পশ্চিমে বহে প্রমত্ত যমুনা
সর্বনাশা রূপ
তবুও তাহার প্রেমে মাতোয়ারা
ভালবাসি তারে খুব।
শুকনার সময় ধুধু বালুচর
যেন সাগর সৈকত বেলা
বর্ষায় সাজে সাগর সম
একই অঙ্গে রূপ মেলা।
পুব পশ্চিমে দুইটি নদী
দক্ষিণে ছোট বিল
তরফদারের বিল নামে খ্যাত
মাছ ছিল কিলবিল।
বানের শেষে কমে যেত পানি
গাঁয়ের সকলে মিলে
জালি, পলো নিয়ে 'বাউত' নামাতাম
কাঁদা পানির জলে।
তোমার মাটির প্রতিটি কনা
প্রতিটা পথের ধার
মেখেছি গায়ে আপন মনে
হেঁটেছি বহুবার।
পাড়ার ছেলেরা মেতেছি খেলায়
হৈ-হুল্লোরে মাতি
মনে পড়ে আজ বাল্যকালের
মধুময় সব স্মৃতি।
সবুজ-সেলিম, বাবলু-বাবর
চাঁন-সবুজ ভাই ভাই
মাতিয়ে রাখতাম সারা পাড়াময়
আজ সবে ঠাঁইঠাঁই।
চাচাতো, পাড়াতো ভাই বন্ধু
মিলে সবে দলে দলে
খেলাধুলা শেষে ঝাঁপাইয়া পড়িতাম
সূবর্ণখালীর জলে।
জলকেলিতে মেতেছি সবে
সেখানেও কত খেলা
স্বপ্নের মতো মনে পড়ে আজ
জীবন সন্ধ্যা বেলা।
জননী আমার! ওগো জন্মভূমি
মায়াময় তব বুক
তোমার বুকে আজো খুঁজে পাই
স্বর্গসম সুখ।
তোমাকে ছেড়ে ঘুরেছি কত
বিশ্ব জগতময়
শান্তির ঘুমের শেষ ঠিকানা
যেন তোমার মাটিতেই হয়।
আমরা যারা শোধিতে পারিনি
জন্মভূমির ঋণ
দিনে দিনে দেনা বাড়িছে দ্বিগুন
বাড়িবেই দিন দিন।
অনুজ যারা তরুণ প্রাণ
লোহু টগবগ করে
আমাদের হয়ে শোধিও সে ঋণ
জন্মভূমির তরে।।