বিরহে


একদিন প্রেম ভরে কহিলা শ্রীমতি ।
কানু আমি জানি নাই জীবনের গতি ।।
কিবা আছে মোর ভাগ্যে কি যে ভবিষ্যৎ ।
কানু তুমি বলে যাও করোনা কপট ।।
বৈশাখী পূর্ণিমা রাত কত তার শোভা ।
কুঞ্জবনে সাক্ষী রাখি চন্দ্র আলো আভা ।।
বসিয়া তোমায় পাশে কত না যতনে ।
আর কি রবো না আমি তোমার বাঁধনে ।।
যত্ন করি পারিব না সাজিয়া আহার ।
বদনে তুলিয়া দিতে আহার বাহার ।।
কুঞ্জবনে বাজিবে না মোর এ কিঙ্কিণী ।
সমাজের কাছে রাধা আজ কলঙ্কিনী ।।
যতই চেয়েছি যেতে সব বাধা ফেলে ।
তবু যেন শত বাধা বাঁধে অবহেলে ।।
কাছেতে আসি না যত তত বারে প্রীতি ।
রাধার সম্বল শুধু কানু' প্রেম স্মৃতি ।।
এতেক শুনিয়া শ্যাম রাধা গলে ধরে ।
পাশেতে বসালো তারে কত যত্ন করে ।।
শোনো রাই মন দিয়ে শোনো মোর কথা ।
তোমার লাগিয়া মোর বাজে অন্ত ব্যথা ।।
যখন তোমার মনে জাগিবে গো সাধ ।
শ্যামের ভোজন দিতে থাকিবে না বাধ ।।
যাহা কিছু অন্ন তুমি ভাবো মনে মনে ।
আনিয়া রাখিয়া দিবে এই কুঞ্জবনে ।।
আহার রাখিয়া দিবে এই বৃক্ষ তলে ।
জানিবে তোমার শ্যাম অন্ন নিবে তুলে ।।
তোমার লাগিয়া রাধা শ্যামের পরান ।
সেও কাঁদে একা একা তুমি নাহি জান ।।
বিরহী চাঁদের আলো রাত কাটে যত ।
শ্যামের পরানে রাধা বাঁধা পড়ে তত ।।
এই বাক্য শুনি রাধা খুশি হয় মনে ।
শ্যামের পিরিতি রটে মাতে সর্ব জনে ।।