******************************
শিশুটির ঘুমন্ত মুখ হতে কে মুছে দেবে পৃথিবীর ক্লান্ত কুয়াশা!
কে দেবে ফিরিয়ে এই স্নিগ্ধ মুখের সুন্দর হাসি আবার,
উড়ে গেছে যার,
কোমল চামড়ার ঘ্রান মায়ের কোল ঘেষে,
রাস্তার রাতে অদ্ভুত ঘুমন্ত আকাশে,
কে ফেরাবে খুজে তা,
ক্লান্তির বিধাতা!
জন্মের কারণ খুজি,
শরীরে তার নিহত শ্রমের রক্তের পুজি,
আরেকটি জন্মের ভ্রমে আশা রেখে,
মাথাফেলে ঘুমায় পথের বালুতে,
অক্ষ্মতার দৃষ্ট বান,
জন্মদাগ ক্ষয়ে পায় নিশ্বাসের রুজি।
পচে গেছে তার,
চোখ,ঠোঁট বুক-চিবুক কপাল
দুখের আদরে বালুর আধুলিতেই জন্মে,
উদরের ক্ষুধা-পাজরের চাল।
******************************
শিশুটির স্বচ্ছ চোখে খুধার আগুনে জ্বলে যাওয়া শৈশবের ছাই
সভ্যতার ধুলো তার গায়ে হাতে
প্রতিটি দিন বাড়ে এ পৃথিবীর উত্তাপ মানচিত্র বেয়ে,
রাস্তার বিটুমিন গলে বেরিয়ে আসে উত্তপ্ত পথের পাথর,
কচি ঘাসের মতন পায়ের পাতায় মাথা টুকে
খুধা বলে,
মসৃণ তোশক নয়,
এ পথে ঘুমিয়ে আছে কত যে কে আমার সাথে,
তার পরিসংখ্যান নয়,
ভাত চাই।
চাই একটু নির্ভয়ের আশ্রয়।
জানি ওটুকু পেলে পৃথিবী শান্ত হয়,
পৃথিবীতো এখনো মানুষ বয়।
শিশু কি মানুষ নয়!
তবে, স্বাধীনতা মানে কি!
ওই জ্বলে যাওয়া রক্ত মাংস!
ফুল কিশোরীর চুলে সভ্যতার বাদামি ধুলোয় লেগে থাকা
পুজিবাদী ভাইরাস!
স্বাধীনতা মানে কি কেবল চড়ুইয়ের জন্য একটি নিঃশব্দ কার্নিশ!
আর চিলেকোঠার জানালায় ক্ষুব্ধ আরবাইনোসোরাস!
******************************
আমার বুকের পাজর ভেনংে গড়েছো তোমার সভ্যতার মুকুট,
তুমি দানবের মুখ আর আমি তোমার দাতের লিলিপুট।
তোমার দাতে লেগে আছে আমারই রক্ত,
তুমি অর্থের পতি, ভাবছো আমি তোমার ভক্ত।
আমার সন্তানকেও গিলে খাবে তুমি,
তোমার সন্তান গিলে খাবে আমার সন্তানের ভূমি,
জেনেছি আমি
তাই প্রযত্নে জানিয়ে যাবো এ প্রজন্মকে,
কতটা হিংস্র তুমি!
******************************
নিজেকেই খুজতে খুজতে হারাই আমি আমাকে,
এক কুহেলিকার মরীচিকায় হারাই আলোতে,
আমিতো আলো চাই নি!
নিরেট অন্ধকারেই আমার সুখ!
লেবাস অথবা আমি,
আমিটি নই যেন আর!
নিজেকে আর হারাবো কতবার?
এই তবে আহত সংসার!
আমি দৃষ্টিতে প্রতিবিম্বিত হতে হতে
খেয়ালের অবহেলায়
বেলা অবেলার সাথে সময় হারাই,
হারাই আমার বেচে থাকার একান্ত মুহুর্তগুলো।
চোখ আর তার কথা নিয়ে লিখে চলি অবিরাম,
কলমের অলক্ষ্যে শব্দগুলোও সব ছুটছে,
মানুষের ভিতর!
আমার একার নীরবতা ভেনংে
বিস্ময়ের সেই দৃষ্টির নির্লিপ্ততা জ্বালিয়ে
কি চায় এ ক্ষুধিত নগর!
এ সভ্যতার কাছে বেচে থেকে কি পাবো অবসর!
জানা নেই!
জানা নেই পৃথিবীর বোধিত সমুদ্র হতে
তুলে আনা নির্বোধ বালু দিয়ে
আর কতদিন সভ্যতা গড়বে মানুষের হাত!
মানচিত্রে বসবে আরো মানুষের দাত।
যেখানে জীবন জন্ম মৃত্যুর ব্যবধানে সময়ের যোগজ,
সেথা সব কি সহজ!
না জেনে অক্ষমতা লুকিয়ে,
মাঝে মাঝে নিখোঁজ হয়ে যেতে ইচ্ছে করে,
তারপর আবার ভাবি,
এই যে আজ কালের বেশ,
তা তো বদলে যাবেই চোখে,
মনুষ্যত্বের নিয়তিও কি বদলে যাবে!
আবার কি অন্য কোথাও নতুন করে বসন্তের পাতার মতন জেগে
ঝরে যাবে শিতের বিকেলে!
নক্ষত্রের মতন জন্ম পাবে সুষম শুন্যতায়!
বেলার ডাক ফুরায়।
******************************
এখানে কোন কবিতা নেই!
শতাব্দীর শেকড় খুড়ে অজ্ঞাতনামা কোন শিশুর ফসিল খুঁজে পাবে!
তবুও কোন রেনেসাঁস পাবে না!
রেনেসাস! সেই তো সময়ের ইতিহাস!
ওই মুল্যবোধ!
যাদের বিবেকে বেচে থাকে আমুল নির্বোধ,
তাদের কেবল মিষ্টি ফলের লোভ!
তাদের বিপ্লবের কথা বলা বাতুলতা,
মনেই রাখ ক্ষোভ! রেখো আশালতা!
সময়ের সমান্তরালে আবার হয়তো জাগবে
তরনংগ,
মহাঘূর্নীতে চোখ মেলে,
সেদিন উড়িয়ে উদ্দাম চুল,
ধনপতির তন্ত্র খেয়ো গিলে!
তাদের অট্টালিকার শিখরে জ্বালিয়ো বিপ্লবী আলো,
অস্ত্র নাও,গায়ে মাখো ফসিলের কালো।
এখানে কোন কবিতা নেই,
ভোগের আভিজাত্যে আছে কেবল খুধার বিজ্ঞাপন,
আছে ঠগ,জুতচোরের নেশাতুর অক্ষয়বাদীতার আলাপ,
আছে কীটের মানসিকতার পা,
তাদের মারতে বুলেটও নেই!
আর নয় সময় অপচয়,
কবিতার জন্যে অপেক্ষা নয়।
ক্ষয়ে যাওয়া সময়ের রুগ্ন করুন হাতের জন্য,
কেবল সহানুভূতির শব্দ নয়।
যাদুঘর হতে তুলে আনো বেয়োনেটগুলো,
বিবেকের উত্তাপে জ্বালানো দাবালনে
লাল করে ঝলসে নাও,
কামার,কুমার,কৃষকের হাতে দাও,
পোড়া হাতের চিৎকারে গুড়িয়ে দাও
তোমাদের হাতুড়ি গড়া সভ্যতা!