সঙ্কিত কেন বীরের জাতি?
সামনে আসিছে প্রদীপ্ত প্রাতি।
ক্ষণকাল আর লড়িয়া জঙ্গ
অচিরেই পাইবে শান্ত তরঙ্গ,
সেথা পাড়ি দিয়ে তব রণতরী
কাম্য সে ঘাটিতে নোঙ্গর করি,
দেখিবে সুদিন দু-আঁখি পটে
স্বপ্ন ফলিবে সে মরু তটে,
তীর্থ চাহনি হইয়া ক্ষান্ত,
চলিবে পথিক হইয়া ক্লান্ত।
ফলিবে সেথায় উদ্ভূত রঙ্গনা,
প্রসুনে ভরিবে সে মরুঙ্গনা।
জুড়িবে চক্ষু খুলিতে দৃষ্টি,
চারিদিকে দেখিয়া এ নবসৃষ্টি।
উড়িবে পুনঃ মুক্ত ঝাণ্ডা!
দেখিয়া হইবে বক্ষ ঠাণ্ডা।
থামিবে না আর বোল-বাচালতা,
বন্দী হইবে না সত্যির আকুলতা।
হাসিবে সেদিন হা হা, অট্টহাসি,
বেকসুর আর পরবে না ফাঁসি।
হয়রানি যত মামলা-হামলা,
লহুতে মুছিয়া হইবে শ্যামলা।
পুস্তকের যত মিথ্যা কাহিনী,
ছাই করে দিবে ভীম বাহিনী।
সত্য লেখার দক্ষ কলমে,
নব্য ইতিহাস লেখিবে অদমে।
চুর তস্করের হবে না ঠাই আর,
লম্পট সব ভাগিয়া সাবাড়।
ধর্ষিতার আকুতি আর্ত চিৎকার
থামিবে থামিবে, বলি অঙ্গীকার।
হা-ভাতের ভাত খায় যে কাড়িয়া,
জুলফিকারে দিব সে বক্ষ ফাড়িয়া।
ভিটেমাটি হরিবি? জবর-দখল?
হারামির রক্তে, স্রোত কলকল।
অন্যের কড়িতে দিবে যে হাত,
দেখিবে না আর দীপ্ত প্রভাত।
সত্যের ধ্বনি লাগিলে বেসুরো
সীসা ভরে দিবে টুকরো আঠারো।
মিথ্যা-ভ্রান্ত পাতিবে যে ফাঁদ,
জবাব হবে তার ভেঙ্গে দুই দাঁত।
পথচারী একা গভীর রাত্রে,
চলিবে পথ নির্ভয় নিরস্ত্রে।
পথ রুখিবে না রাক্ষস রাবণ,
নিরাপদ ধনরাশি, হর্ষ প্রবণ।
হে রীরজাতি দাড়াও ঘুড়িয়া,
চলবে কত পথ? খুঁড়িয়া মরিয়া!
জন্মিবে কবে সেই মহানেতা
অভিযান চালিয়ে হবে সে বিজেতা।
ফররুখের সেই স্বপ্নের মাঝি!
ঘুমাও কত, আজ উঠ জাগি।
পিষিত, ক্ষুধিত, শঙ্কিত জাতি!
অকুতোভয় সালার জাগ, ইতিহাসখ্যাতি।
আজো আছি মোরা তোমার অপেক্ষায়,
পথ চেয়ে চেয়ে অশ্রুসিক্ত প্রতিক্ষায়।