সেদিন দেখিলাম প্রভাতের শুরুতে
এক ছোট্ট ছেলে ,জীবনের থলে কাধে
রাস্তায় রাস্তায় কাগজ কুড়ায়ে রাখিতেছে তাতে
কখন কাগজ কুড়ায়,কখন আকাশ দেখে
বিষণ্ণ চোখে মানুষ দেখে -
ভালবাসার খুব অভাব।

যখন নটা বাজে,শহরের বাবুরা অফিসে ছুটে
আর ধনীর সন্তানেরা নাস্তার টেবিলে বসে
এটা ওটা গিলে যায় ঔষধের মত করে,
তখন ছেলেটা হন্ত –দন্ত হয়ে ডাস্টবিনের দিকে ছুটে
কিছুটা বাদশাহী খাবারের খোঁজে
খুজে খুজে এপার ওপার
দেখেনা বাসি পচা খাবার
ক্লান্ত নয়নে ,যখনই হাল ছেড়ে বসে
দেখে এক বাবু,খাওয়া শেষে খাবার ফেলেছে ছুড়ে
ছুটে যায়-
কাছে গিয়ে দেখে আর এক জন ভাগিদার
ভূখা ভাগিদারের ক্ষুধার্ত চোখ,রুক্ষ ত্বক
দাঁতগুলো বের করে বোঝায় সে ভয়ংকর বাঘ,
উপায় না দেখে ঢিল মারে কুকুরটিরে
তাড়াখেয়ে বেচারা দূরে দাঁড়িয়ে রয়
খাবারটা তুলে নিয়ে অর্ধেক খায়,বাকিটুকু
বাবুদের মত করে ,ঢিল মেরে কুকুরটিকে দেয়
এরপর-
নিজেকে রাজা ভেবে,জীবন রাজ্যে ঘুরে বেরায়।

জীবনের যুদ্ধ করতে করতে বেজে যায় এক টা
তখন ছেলেটা ছুটে যায়,পাড়ার হোটেলের পাছটা
ঝুটা সব খাবার গুলো-অমৃত স্বাদ তার
খাবার গুলো ছেলেটাকে আয় আয় ডেকে যায়
খাবার চাস ব্যাটা ,থালা গুলো সাফ কর সালা
অবহেলার চোখে বলে এসব –হোটেল কর্মকর্তা
বাসনের ঝুটা খায় আর কাজ করে চলে ছেলেটা
তবু এই ময়লা হাতে তার জীবন সাজানোর বাসনা।

কাজ করে খেতে খেতে বেজে যায় চার টা
সব কাজ করে শেষ,হোটেল থেকে বের হয়ে
ভাবে এখন খেলার টাইম গন্তব্য মাঠটা,
কানামাছি ভোঁ ভোঁ যারে পাবি তারে ছোঁ
শরীরে গন্ধ বলে ,খেলা আর হয় না তার
জীবনের খেলা খেলেই ক্ষান্ত সে আজ।

জীবনের পাওয়া না পাওয়া ভেবে ভেবে,বেজে যায় আট টা
ঘরে ফিরে এসে দেখে মা-বাবা করছে ঝগড়া
ভঁয়ে মার কাছে খাবার চাওয়া হয়না,
ক্ষুধার্ত পেট আরও অনেক অভিমান ,কষ্ট
মায়ের সাথে ঘুমানোর আশা হয়ে যায় নষ্ট।

উপড়ে তাঁরা নিচে ছালা
হাড় আর ইটে খাপ খাইয়ে নেওয়া
ও যেন তার এক আদম্য ক্ষমতা,
তাই একা শুয়ে দেখে নিষ্ঠুর পৃথিবী
ভাবে,খাবারই বুঝি সকল সুখের সমাপ্তি-
অবশেষে,চোখ বুঝে ঘুমায় অবধি
এই ঘুমে ঘুরে বেড়ায় স্বপ্নের মেদেনী।