শূন্য বাড়ি, শূন্য উঠোন, শুন্য বায়ুর কথোপকথন,
নিঃশব্দে শীতের পাতাঝড়া গাছের মতো দুঃখী চোখে চেয়ে আসে আমার কৈশোর,
প্রাণোচ্ছলতার তীলক কপালে, হাতে উদ্দীপনার আবির,
বুকের ভেতরে হৃৎপিণ্ড নামক সদা চলমান যন্ত্রখানির মাঝে আনন্দের সঞ্চার জাগে,
বুড়ো শরীরের হাড়ে জাগে প্রাণের সঞ্চার।
ওই যে বড়ই গাছের তলায় শীতের চাদর পেচিয়ে বসে আছে যৌবন,
টগবগে কামনা জড়ানো যৌবন,
বুকপকেটে স্মৃতির জলধারা জমা হয়,
আগুনের মশাল চোখে শীতল বরফের আবেগ নিয়ে এসে ছিলো একজন,
যৌবন তার ঠিকরে আসে না, শরীর লাস্যময়ীদের মতো ঝলাকায় না,
তবু একটা মায়ার স্রোত আটকে রাখতো আমায়।
যে নদীর জলে শরীর মিশেছে, মিশেছে আত্মা,
আমি তাকে ছেড়ে এসেছি।
যে সবুজ ক্ষেতের ধারে আমি স্বপ্ন দেখেছি বাঁচবার,
আমি তাকে ছেড়ে এসেছি।।
শরীরের মায়া আমায় বাঁধে নি,
অর্থ পাপে অন্ধ মন ভিড়ে ছিলো শহুরে আবর্জনায়,
বন্যার বাঁধ ভেঙে পাড়ি দিয়েছিলো কিছু উৎসুক জনতা।
শরীরের জোরে তুলেছিলাম অট্টালিকার বাগান,
আকাশ ছোঁয়া বাড়ির ফাঁকে জীবনের রেশ নেই,
নীড়ের জ্যোৎস্না ঢাকা পরে লোভাতুর চোখের কাছে,
একবিংশ শতাব্দীর ধূলো ফিরে যেতে চায় আদিম আকাশে,
বন্ধন ছিঁড়ে ব্যবধানের আলোতে ধুয়েছি মুখ।
হ্যা আমি পরাজিত,
যেই সভ্যতা আমার থালায় ভাত জুটিয়ে ছিলো,
আমি তাকে ভগবান মেনেছিলাম,
তবে আশা ফুরিয়ে ছিলো বেওয়ারিশ লাশের গন্ধে,
প্রাচীন গন্ধ, শোধা মাটি জড়ানো শরীরের গন্ধ।
আমি ফিরে এসেছি, ওরা ফিরেনি,
আমি চোখের কোণে নাগাসাকির নির্মমতা দেখছি, ওরা দেখেনি,
ওরা দেখেনি,
ওরা দেখেনি।