শরৎ নামে ধানের শীষে, কিন্তু তোমার ছায়া  
পাতায় পাতায় জমে থাকে অলস বৃষ্টির মতো—  
কখনো পায়জামার ভাঁজে, কখনো চায়ের কাপের ধোঁয়ায়,  
সেই পাখি, যে উড়ে যায় উল্টোদিকে  
নদীর স্রোতের ভাষা বুঝতে না পেরে।  

শহরের রেললাইনে জমে থাকা শিশির  
আমাকে শেখায় বিরহের ব্যাকরণ,
প্রতিটি ট্রেনই তোমার মুখের দিকে যাত্রা করে,  
কিন্তু প্ল্যাটফর্মে থেকে যায় শুধু  
একটি কালো কোটের অসমাপ্ত গন্ধ

তুমি হঠাৎ আলো নিভিয়ে দাও—  
বিছানায় পড়ে থাকে শূন্যতার নীল চাদর,  
আর জানালার গ্রিলে আটকে যায়  
নগরের অর্ধেক ছায়া;  
কফির দাগে লেখা হয় তোমার ফোননম্বর,  
যে সংখ্যাগুলো ঝরে পড়ে রাতের অন্ধকারে।  

বিরহ এখানে রূপকথার পোকা:  
কোনো এক গাঁদা ফুলের গর্ভে ডিম পাড়ে,  
আর নষ্ট জলের ট্যাঙ্কে জন্ম নেয়  
আমাদের অদৃশ্য সন্তান—যার চোখ  
দুই জনার মেলবন্ধনের অঙ্ক কষে যায় রাতজাগা পিঁপড়ার মতো।  

তবু...  
তোমার নেইলপলিশের আঁচড়ে লেগে থাকে  
শীতের তারা;  
আমি খুঁজে ফিরি সেই রোদেলা দুপুর—  
যেখানে কলমে আটকে থাকা প্রেমের শব্দ  
মিশে যায় শুদ্ধ বাতাসে,  
আর দু'টি হৃদয়ের মাঝে অঙ্কিত হয়  
একটি নদী, যে কখনো পাড়ে না গাঁথে সেতু।  

বিরহের রূপকথা
এই তো আমাদের প্রেম—যেখানে দূরত্ব  
একটি কাকের ডানায় জমে থাকা কুয়াশা,  
যেখানে চুম্বন মানে দুই নক্ষত্রের মাঝে  
অন্তরীক্ষের নিঃশব্দ যুদ্ধ;  
আর বিচ্ছেদ—একটি হলুদ পাতা,  
যে নিজেকে ভাবে অমর,  
ফসলের মাঠে পড়ে থাকা সবুজের গর্বে!