আমার মাঠ ভর্তি ঘাসফুল, হেমন্তে ঝড়ে পরা শিউলি ফুল শোনো,
"আমি কৃষ্ণচূড়াকে ভালোবাসি"।
বেদনার রঙ লাল, বিষন্নতার রঙ লাল।
আমি যে শবদেহ বুক পিন্ডে নিয়ে ঘুরি তার রঙ লাল।
একটা রঙহীন পর্দা দোলে মাঝ আকাশে।
জড়তার ভীড়ে প্রেম নেই,
দেখার মোহ কেটে গেলে কেবলই পাতাময় কুৎসিত গাছ।
শোকগ্রস্ত শশ্মান থেকে জেগে দেখি দুঃখ গায়ে জড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে কৃষ্ণচূড়া,
কি সাহসিকতা!
বুলেট চলার দিনে কেঁদেছিলো শহরের ইট, পাথর আর কৃষ্ণচূড়া,
এই নগর ভুলে যায়, নাগরিকতা ভুলে যায়,
মায়ের লাল আচল, প্রেমিকার চোখ, শিশুর ক্রন্দন ওরা ভুলে নি,
ভুলে নি গ্রাম্য বউ এর আশাহত চোখ।
পিচঢালা রাজ পথ, থোকা থোকা ফুলেল রক্ত,
মধ্যরাতের মতো নীরব বৃষ্টি ধুয়ে নিতে পারে নি কলঙ্ক,
মুখরতার সুর গলায় তোলা পাখিদের দল নিখোঁজ।
স্থবিরতায় কি সার্থকতা নেই?
সর্বস্ব বিলিয়ে নিঃসঙ্গতার মাঝে কি বিজয়ের ঘ্রাণ নেই?
সাইরেন বাজিয়ে এম্বুলেন্স ছুটছে,
আমার হাতে সাদা ঠান্ডা এক রমনীর দেহ,
জন্মভূক প্রাণীর লোভের পারদ জাগ্রত হয়,
দ্বিধার আকাশ ফুঁড়ে রক্তের আদ্র জল।
তারপর, তারপর মরুময় ক্রন্দন।
বেদনা, পরাজয়, গ্লানি নিয়ে কৃষ্ণচূড়া আজও ফোটে,
যে শহর বিতাড়িত করেছিলো পাখিদের, ফুলদের, প্রকৃতির স্নেহমায়াকে,
তার বুকে জ্বলছে লাল ফুলেল আগুন।