নদীর বুকে জেগে ওঠা সূর্যের রক্তিম আঁচড়ে  
ধান ক্ষেতের সবুজে লেগেছে সোনালি প্রহর,  
বর্ষা নামে আকাশের বুক চিরে—  
কাদায় গড়ায় কচুরিপানা, কাঁদে পদ্মা-যমুনার তীরে।  

কিন্তু কে যেন চোরাবালির মতন টেনে নেয় আলোর ফসল,  
অন্ধকারের গলিতে মিশে যায় স্বপ্নের সোনালি রস।  
একটি শিশু হাত বাড়ায় নদীর দিকে,  
মাটি থেকে উঠে আসে লাল সিঁড়ি— রাষ্ট্রের গায়ে জমে ক্ষতচিহ্ন।  

ধান্দাবাজির বাজারে ছায়ারা হাঁটে,  
লালসার গাছ শেকড় ছড়ায় রাতের অন্ধকারে;  
প্রতিটি পাতায় বিষের ফসল, প্রতিটি ডালে মৃত্যুর হাসি,  
মুক্তো-ঝরা নদীর গায়ে জমে থাকে লুণ্ঠনের রাশি।  

প্রকৃতির ক্যানভাসে আঁকা এ দেশ  
কেন হারায় গলিত মোহে, ক্ষয়ে যায় অহংকারের বেশ?  
নদীর জল আজ কালো হয়ে বইছে,  
অন্তরে জমা লবণাক্ত জ্বালা— কাঁদে বাংলার অশিক্ষিত মাটিরা।  

তবুও বৃষ্টির পরে মেঘ সরে গেলে  
আকাশে জ্বলে স্বাধীনতার তারা,  
কোনো এক ভোরের অপেক্ষায় জেগে থাকে মাটি,  
মুক্ত বাতাসে উড়ে যায় লাল সবুজের চিরস্থায়ী আঁকিবুঁকি।  

বাংলাদেশ কারো হলো না?  
না, এ তো ঠিক নয়—  
এ মাটি তারই, যে জানে ক্ষতের গভীরে  
অঙ্কুরিত হয় নতুন সূর্যের দাবি।  
কিন্তু আজকে— চোখে জল, বুকে আগুন,  
স্বদেশ যেন অধরা এক ছায়া,  
ভাঙা ঘড়ির কাঁটায় আটকে থাকা এক অসমাপ্ত গান...