গ্রামের হৃদয়, রক্তনালির মতো এঁকে বেঁকে চলা।
আলোর ঝলকানিতে নয় ভরা!
নয় কোনো কোলাহলে মুখরিত।
এই পথের বুকে মিশে থাকে পায়ের ছাপ,
মিশে আছে হাজারো গল্পের প্রতিচ্ছবি, সংলাপ।

গোধূলি বেলায় যখন সূর্য ডুবে যায়,
আকাশ রাঙিয়ে তোলে লালিমায়!
মেঠোপথ সোনালী আভায় ঝলমল করে ওঠে। ধুলোমাখা পথের ধারে সারি সারি গাছ,
দেখে মনে হয়, যেন প্রকৃতির সাজানো বাগান।
পাখিদের কূজন, গাছে গাছে ঝুলে থাকা শাখা-প্রশাখা,
যেন এই পথের একান্ত সঙ্গী সৌন্দর্য উদ্যান!

বর্ষার দিনে গ্রামের মেঠোপথ সজীব হয়ে ওঠে।
কাদা মাটির ছোঁয়ায় পথ যেন নতুন জীবন পায়।
খেজুরের সারি সারি গাছ,
তাল গাছের মাথা উঁচু করা সারাস,
এই সবুজের মাঝে মেঠোপথের কাদামাখা রূপ,
যেন এক অন্যরকম সৌন্দর্য স্বরূপ!

পথের ধারে বসে থাকা বুড়ো বটগাছ'টা।
তার শিকড় মাটিতে গাঁথা,
যেন এক পূরানো ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে,
বসে আছে যুগ যুগ ধরে!
বাতাসে দোলা দেয় তার বিশাল ডালপালা,
যেন আমন্ত্রণ জানায় পথিক সেবায়।

শীতের সকালে কুয়াশার চাদরে মুড়া চারপাশ,
মেঠোপথের বুকে জমে থাকা শিশির বিন্দু ঘাস,
যেন হীরে-মোতির ঝলমলে অলঙ্কার!
সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাওয়া বাচ্চাদের কলরব,
মাঠে কাজ করা কৃষকদের প্রাণচাঞ্চল্য হাসির রব!
এই পথেই দেখা মেলে তাদের সরল জীবনী সব।

মেঠোপথ,  একটা আবেগ, একটা স্মৃতির সম্ভার।
গ্রামের প্রতিটি মানুষের জীবনের সাথে মিশে থাকা এক টুকরো ইতিহাস!
সেই পথের বুকে জমে থাকা পায়ের চিহ্নগুলো,
যেন প্রতিদিন নতুন করে গল্প বলে যায়!

প্রকৃতির কোলে বেড়ে ওঠা এই মেঠোপথ,
মনে করিয়ে দেয় জীবনের সরলতা,
মনে করিয়ে দেয় স্নিগ্ধতা আর গভীর শান্তির পথচলা।
মেঠোপথ, হৃদয়ের মণিকোঠায় এক অমলিন স্মৃতি,
যা মুছে যাওয়ার নয়, রয়ে যায় যুগ যুগ ধরে, স্মৃতির অম্বরে

=========