বেশিরভাগ মানুষ নিজেই নিজের জন্য এক জেলখানা তৈরি করে নেয়।
সে জেলখানা অদৃশ্য, চোখে দেখা যায় না!
কিন্তু অনুভব করা যায় প্রতিটি নিঃশ্বাসে।
সেই খাঁচার গায়ে আঁকা থাকে কল্পনার সীমাবদ্ধতা,
আঁকা থাকে হীনমন্যতার গভীর ক্ষতচিহ্ন।
মানুষ সেখানে বন্দী হয়ে পড়ে,
আর মুক্তির স্বপ্ন দেখা ভুলে যায়।
মনের সেই খাঁচায় মানুষ প্রতিনিয়ত ছটফট করে!
যেন আকাশের নীলে ডানা মেলার ক্ষমতা আছে—
কিন্তু ভয় আর দ্বিধা তাকে আটকে রাখে।
সংকীর্ণতার শিকল তাকে বেঁধে রাখে।
সেই শিকলে, জীবনের প্রতিটি স্বপ্ন নিঃশেষ হয়ে যায়,
মুছে যায় জীবনের চাওয়া-পাওয়ার সম্ভাবনা।
হৃদয়ের গভীর থেকে ভেসে আসে এক চাপা কান্না—মুক্তি চাই, স্বাধীনতা চাই।
কিন্তু সেই কান্নাও হারিয়ে যায় নিজেরই বানানো শূন্যতার প্রাচীরের ভেতরে।
জীবন যেন এক অবিরাম সংগ্রাম,
যেখানে কেউ কেউ জানেই না লড়াইটা কার বিরুদ্ধে।
সেই খাঁচার চাবি নিজের হাতেই থাকে,
তবুও অজানা ভয়ে তাকে ছুঁতে কেউ সাহস করে না।
মানুষ নিজেই নিজের চারপাশে গড়ে তোলে এক অদৃশ্য জেলখানা।
এই জেলখানা কোনো ইট-কাঠের নয়,
বরং মনের গভীরে আঁকা কল্পনার এক দুর্ভেদ্য খাঁচা।
সেখানে সে নিজেই নিজেকে বন্দী করে রাখে,
ভুলে যায় মুক্তির স্বাদ।
প্রতিনিয়ত নিজের ভেতরে ছটফট করে,
ডানা মেলার আকাঙ্ক্ষা জাগে,
কিন্তু বাস্তবতা আর শঙ্কার শিকলে বাধা পড়ে থাকে সে।
হীনমন্যতার আঘাতে সেই খাঁচার প্রতিটি দেয়াল ধীরে ধীরে আরও শক্ত হয়ে ওঠে।
সংকীর্ণতা লেগে থাকে প্রতিটি কোণায়, কোণায়!
যেন এক অদৃশ্য হাত তাকে টেনে নিয়ে যায় আরও গভীর অন্ধকারে।
স্বপ্নগুলো মিইয়ে যায়, আশা হারিয়ে ফেলে তার রঙ।
মানুষ বুঝতে পারে না যে—
সে নিজেই তার সম্ভাবনার গলা টিপে ধরে আছে।
জীবন এক অবিরাম যুদ্ধ,
কিন্তু শত্রু আসলে বাইরে নয়, ভেতরেই।
নিজের ভয়, নিজের সীমাবদ্ধতা, নিজের ছোট ছোট চিন্তাগুলোই তাকে বন্দী করে রাখে।
অথচ সেই বন্দিদশা থেকে মুক্তির চাবি তারই হাতে।
কিন্তু সাহস ক’জনেরই বা হয় তা ছুঁতে, ভাঙতে?
ক'জনের সাহস আছে সেই মনের খাঁচা, সেই নিজের তৈরি জেলখানা উড়িয়ে দিতে?
=========