আজ এই পৃথিবী বড় অচেনা মনে হয়,
যেন আমি মানুষ নই—
অন্য কোনো নক্ষত্র থেকে আগত এক এলিয়েন!
এই পৃথিবীর বুকে স্পন্দন আছে, সংঘর্ষ আছে, গতি আছে—
তবু আমার হৃদয়ে এক অনন্ত শূন্যতা।
উদ্যম, চিন্তা আর কাজের স্রোত বয়ে চলে,
আকাশ জুড়ে ছড়িয়ে থাকে সূর্য, বৃহস্পতি, কালপুরুষের দ্যুতি—
তবু আমি রাতের আঁধার থেকে তাকিয়ে থাকি প্রভাতের অপেক্ষায়।
শত শত মানুষের চিৎকার ভেসে আসে কানে,
প্রসববেদনায় ভরা এক ভয়ার্ত আরতির সুর—
এ যেন জীবনের নির্মম উল্লাস!
গভীর আঁধারে ঘুমিয়ে থাকা আমার আত্মা,
তোমাকে কেন বারবার জাগাতে চায় এই সময়ের গ্রন্থি?
হে স্মৃতি, হে বিস্মরণের হাওয়া,
হে বসন্তের মেঘ ভাঙা কোকিল,
তোমরা কি জানো, ঘুম থেকে জেগে ওঠা মানে প্রতিদিন নতুন যন্ত্রণার মুখোমুখি হওয়া?
নদীর ছলাত-ছলাত শব্দে হয়তো একদিন জেগে উঠবো,
কিন্তু চেয়ে দেখবো না আর সেই গ্রহণ লাগা একাকী চাঁদের পানে।
আজ বৈতরণীর স্রোত থেকে সমস্ত উচ্ছ্বাস গুটিয়ে নিয়েছি,
নিজেকে নিবেদন করেছি কীর্তিনাশার নিরব জলরেখায়।
সেখানেই গড়বো এমন এক কীর্তি,
যা হবে দেশপ্রেমের অঙ্গীকার—
অচেনা এই পৃথিবীতেও বাঁচার এক অনন্য শপথ।
=========