স্তব্ধ পাহাড় এক অদ্ভুত স্থিরতায় দাঁড়িয়ে আছে,
যেন অনন্তকাল ধরে কোনো গল্প শুনিয়ে যাচ্ছে।
পাহাড়ের প্রতিটি শিলায় লেগে আছে চাপা আর্তনাদ,
যা শুধু রাতের নীরবতাই শুনতে পায়।
তার পায়ের কাছে দাঁড়িয়ে, জিজ্ঞেস করি—
কেন এত ভারী তোমার বুক?
পাহাড় কোনো উত্তর দেয় না, শুধু হাওয়ার শব্দ,
মনে হয় এটা দুঃখের এক দীর্ঘশ্বাস।

পাহাড়ের প্রতিটি শিলাখণ্ড যেন—হৃদয়ের একেকটা ভাঙা অংশ,
যা খুঁজতে খুঁজতে আমিও ক্লান্ত।
তবুও থেমে যেতে পারি না,
কারণ এই ব্যথার পাহাড়ই মনের আয়না—
যেখানে নিজের অস্তিত্বের ছায়া দেখি।

পাহাড় বলে, "ব্যথা আসলে ফুরোয় না",
সময়ের সাথে সাথে সেটি অন্য রূপ নেয়।
সেই রূপ নিয়ে যায় এক নিঃসঙ্গতার দেশে,
যেখানে ব্যথাকে আর শত্রু বলে ভাবি না।
তখন ব্যথা হয় বন্ধুর মতো,
যা ভেতরের সমস্ত দুর্বলতাকে খুলে দেয় আর বলে—
"তুমি এখনো বেঁচে আছো"।

ব্যথার পাহাড় প্রতিদিন ডাকে,
ডাকে তার নীরবতার গভীর থেকে।
চেয়ে দেখি তার শিখরে জমে থাকা হাজার স্মৃতির ভার,
প্রতিটিই যেন কোনো না বলা গল্পের পৃষ্ঠা।
পাহাড়ের গায়ে লেগে থাকা দাগগুলো যেন নিজের বুকের ক্ষত!
যা একান্ত আর ব্যক্তিগত।

পাহাড়কে ঘিরে হাঁটতে হাঁটতে অনুভব করি,
ব্যথা কখনো শূন্যে মিলিয়ে যায় না।
এটি শুধু রূপ বদলায়, কখনো গর্জনের মতো,
কখনো অশ্রুপাতের মতো।
তার পায়ের নিচে জমে থাকা শুকনো পাতা বলে দেয়,
কষ্টও একদিন মাটির মতো নরম হয়ে যায়!
তবু থেকে যায় তার অস্তিত্ব।

স্তব্ধ ভারাক্রান্ত মনে তার ছায়ায় বসে জানতে চাই,
এ ব্যথার শেষ কোথায়?
পাহাড় কোনো উত্তর দেয় না।
তার নীরবতা শেখায়, ব্যথার শেষ নেই,
তবে তার সঙ্গেই জুড়ে থাকে বেঁচে থাকার পাঠ।
পাহাড়ের চূড়ায় উঠে দেখি এক নতুন আলো—
যেখানে ব্যথা আর ভেতরের অন্ধকার এক হয়ে গেছে। সেখানেই আবার নিজেকে খুঁজে পাই।

=========