হেমন্ত এসে দাঁড়িয়েছে নিঃশব্দে,
যেন কারো মনোযোগ আকর্ষণ করতে চায় না—
বরং পৃথিবীর কোলাহলকে শীতল পরশে ঢেকে দিতে এসেছে।
আকাশ নীলের গভীরে ডুবে গেছে,
সেই নীলে মিশে আছে অনন্তের এক নিস্তব্ধতা।
সূর্যটা আলতো হাতে আলো মেখে দিয়ে যায় ধানের ক্ষেতে,
সবুজ পাতা যেন সোনার পাতায় পরিণত হয়েছে!
প্রতিটি ধানগাছের শীষে জ্বলজ্বল করছে আলোর কণা,
যেন মাটি থেকে একদল তাঁরা উঠেছে আকাশের পথে!
হেমন্তের হাওয়ায় আছে এক ধরনের নীরব সঙ্গীত,
যেন আছে কোনো কথাহীন সুর।
সেই সুর মিশে যায় কুয়াশার মধ্যে,
মিশে যায় ভোরের শিশিরে আর ঘাসের নরম কোমলতায়।
পাতার উপর জমে থাকা শিশিরবিন্দুগুলো রোদের আলোয় জ্বলে ওঠে,
যেন পৃথিবী তার সব ক্লান্তি ঝেড়ে ফেলে দিয়েছে।
দূরের বাঁশিতে ভেসে আসা সুরটা—হেমন্তের নীরবতাকে যেন আরও গভীর করে তোলে।
পাখিরা দূর মেঘের রাজ্যে উড়ে গেছে,
শুধু কয়েকটা বক হয়তো মাঠে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে।
তাদের সাদা পালক আর রোদ মিলে—
এক কোমল সুরমায় জড়িয়ে যায়, শান্ত মাটির বুক।
হেমন্ত যেন এক শান্ত কবিতা,
যেখানে শব্দ কম, অনুভূতির ঢেউ বেশি।
কোনো বিরহ নেই, নেই কোনো উত্তেজনা—
শুধু এক নিবিড় প্রশান্তি, এক পরিপূর্ণতার ছোঁয়া।
হেমন্তের এই শান্তির সুরলিপি মনের গভীরে এক মৃদু সুরে বাজে,
স্মরণ করিয়ে দেয় প্রকৃতির নির্ভার,
মনে করিয়ে দেয়, প্রকৃতির সহজ, সুন্দর সৌন্দর্যকে।
==========