শহরের ব্যস্ততার ভেতরে প্রকৃতির এক টুকরো শ্বাস নিতে চেয়েছিলাম।
কংক্রিটে'র জঙ্গলে হারিয়ে যাওয়া সবুজের স্নিগ্ধতা,
যেন কোথাও আর নেই।
রাস্তায় পা ফেলা মাত্রই নাকে এসে লাগে ধোঁয়া,
লাগে কার্বনডাইঅক্সাইডে'র গন্ধ।
একসময় যে বাতাস ছিল স্বচ্ছ, আজ তা ভারী!
ভারী হয়েছে মানুষের লোভের বোঝায়।
নদীর পাশ দিয়ে হাঁটতে গিয়ে দেখি,
তার বুকে বয়ে যাচ্ছে কেবল ময়লার স্রোত।
তার স্বচ্ছ জল কোথায় যেন হারিয়ে গেছে!
হয়তো আমাদের ভুলে,
হয়তো আমাদের বেখেয়ালিতে।
আমরা ভুলে যাই, এই নদী'ই ছিল সভ্যতার সাক্ষী,
ছিলো আমাদের জীবনের প্রতিচ্ছবি।
গাছেরা আজ নিঃশব্দে কাঁদে,
তাদের ডালপালা আজ ঝরে পড়ে।
পাখিরা হারিয়ে গেছে কোথায় জানি না,
তাদের কণ্ঠস্বর আর শোনা যায় না।
আমরা মানুষ, নিজেদের নিয়ে এত ব্যস্ত,
এত ব্যস্ত আমাদের এই আধুনিকতার মিছিলে,
ভুলেই গেছি প্রকৃতির প্রতি আমাদের দায়িত্ব।
আমাদের শহরের আকাশটাও আজ ধূসর।
সূর্যের আলো পৌঁছানোর আগে—
তাকে ছেঁকে নেয় দূষণের ঘন মেঘ।
তার নীচে দাঁড়িয়ে আমরা প্রতিদিন শ্বাস নেই,
তবু বুঝতে চাই না,
কী নিঃশব্দে পৃথিবীটা বিষিয়ে উঠছে!
প্রকৃতি চুপ করে থাকে না।
তার প্রতিশোধ আসে নীরবে,
আসে ধীরে ধীরে।
কখনো তা আসে বন্যার রূপে, কখনো খরায়,
কখনো বা আসে অগ্নিকাণ্ডের তাণ্ডবে।
আমাদের যত উন্নয়ন'ই হোক,
প্রকৃতির এই শক্তির সামনে আমরা অতি ক্ষুদ্র।
তবু আশাবাদী।
হয়তো একদিন আবার ফিরব সেই সবুজের কাছে,
সেই প্রকৃতির কোলে।
বুঝতে পারব যে,
দুনিয়াটা আমাদের নয়, আমরা তার।
সে দিন, হয়তো আবার নদীর জল হবে স্বচ্ছ,
বাতাস হবে নির্মল,
আর আকাশে উঠবে রঙিন রোদ্দুর।
========