আজ 30 শে আগস্ট- আমার প্রেমিকার বত্রিশ তম জন্মদিন,
রাত্রি দশটা তেও চাঁদের আলোয় চারদিক তখনও রঙীন।
আমি চলেছি, জন্মদিনের প্রথম শুভেচ্ছা বার্তাটা জানাতে-
আর আনন্দ গুলো ভাগ করে নিতে প্রিয়তমার সাথে।
দেখতে দেখতে-কত তাড়াতাড়ি কত বড় হয়ে গেল মেয়েটা !
আজও মনে পড়ে তোর ক্লাস থ্রীর সেই নাকি সুরের কান্নাটা।
ওই যে দূরে দেখা যাচ্ছে সেই বিশাল আমগাছটা,
যেখানে তোর সাথে গল্প করে কেটে যেত ঘন্টার পর ঘন্টা।
অবশেষে পৌঁছলাম তার কাছে,ঘড়িতে তখন বারোটা পাঁচ বাজে;
তবে পাঁচ মিনিট দেরির জন্য আমার উপর ভীষণ রেগে সে আছে!
অভিমানী সুরে সে বলল-বছরে একটিবার তো আসিস তাও দেরি!
আমি একটু বিনম্ব্রতার সাথে তার কাঁধেতে হাত রেখে বললাম, 'ওকে সরি।'
জানিস তো,আমার মেয়েটাও একদম তোর মত- খুব জেদী,
তুইও খুব আনন্দ পেতিস-একবার ওর সাথে কথা বলতিস যদি।
মৃদু হেসে সে উত্তর দিলো, অত ভাগ্য আমার আর কবে হলো!
এই অভাগীর জীবন থেকে সব রং যেন হারিয়ে গেল।
বউ আছে, মেয়ে আছে- তোর ঘর তো আনন্দে মাখা!
আর এই শ্মশানে পরে থাকি আমি-সারাবছর একদম একা।
এখনও মনে পড়ে সেই হাসপাতালের বেডের মৃত্যু যন্ত্রণা-
তোর সেই চিৎকার করে পাগলের মত প্রবল কান্না,
ওহ! ওহ! ওহ! সেই দিন গুলো যেন কিছুতেই ভুলতে পারিনা,
যাইহোক, আমার আর তোকে পাওয়া হয়ে উঠলো না!
আমিও আমার চোখের জল আর আটকাতে পারলাম না, করুন সুরে উত্তর দিলাম-
আমার ও মাঝে মাঝে মনে হয় আমিও সেদিন মরে গেলে তোর কাছেই থাকতাম।
ভুল তো ছিল আমারই,বাইকে যদি সেদিন তোকে না চাপাতাম!
আমিই তোকে শেষ করে ফেললাম-আর এই মৃত্যু পুরীতে ফেলে দিয়ে গেলাম!
সে হেসে উত্তর দিলো, ধুর পাগল,তুই এখন এক সুন্দরীর বর-
ছেলে মেয়েদের নিয়ে আনন্দ করে - সুখে শান্তিতে কর ঘর।
চলি রে, সাড়ে চারটে বাজে ঘড়ির কাঁটায়,আমার এবার যাবার হয়েছে সময়-
হাসি মুখে দে বিদায় ! আর খুব কষ্ট হলে লিখে ফেলিস তোর ডাইরির পাতায়-
তুই কিন্তু সেই আগের মত এখনো আছিস-
আমার মনের মাঝে সদায়।
আজ বার বার মনে পড়ছে- তোর স্মৃতি-তোর গান- তোর কথা-
দিতে পারলাম না তো কিছুই! তোকে নাহয় দিলাম ডাইরির একটা পাতা।