কানাঘুষো শব্দের আড়াল থেকে,
শোনা যায় এক অস্ফুট দীর্ঘশ্বাস।
ধুলো ওরা পথ গুলো জ্বলে পুরে যায়,
আর মাথা উঁচু করে এক আধুনিক অন্ধবিশ্বাস।
ঘুরে চলে সময়ের চাকা আজ,
আর ডানা মেলে শহরের উন্নয়ন।
মৃত জীর্ণ ধ্বংসস্তুপ জেগে উঠে বলে,
এতে হয়েছে শুধুই মনুষ্যত্বের অপসারণ।
উঁচু উঁচু অট্টালিকার ছায়ায় বেড়ে ওঠে,
ঘর হীন মানুষের বেঁচে থাকার আশা।
আধপেটা খেয়ে বাঁচে মনে ভয়,
হেরে যাওয়া মনে ঘনীভূত হয় নিরাশা।
কালো পথ গুলো বেঁকে চলে যায় দূরে,
বড়ো হতে থাকে শুধু প্রতীক্ষার ছায়াপথ।
হিসাবের পাতা ছিঁড়ে ফুঁড়ে খায়,
ক্ষুধাতুর - অসহায়, মৃতপ্রায় ঐরাবত।
মৃত্যু যেখানে ছেলে খেলা করে রোজ,
অভাব শুধু সময়ের সাথে বাড়ে।
দিনের শেষে খালি হাতে বাড়ি ফিরে,
ভাঙা মনটাই শুধু গুমড়ে গুমড়ে মরে।
শীতের বিকালে আসে কম্বল হাতে ওরা,
ভোটের সকালে ডাল - চাল বিলি হয়।
সুখের ঠিকানা কেউ দেয়না যে এসে,
প্রতি রাতে তাই দেশী বোতলের জয় হয়।
ওদের কাছে এটা শুধু এদো বস্তি,
আসলে এটাও অনেকের কাছে ঘর।
বর্ষাতে সেথা ছাদ ফেটে পড়ে জল,
বাকি সময়টা ম্যালেরিয়া - কালাজ্বর।
লুকতে এদের পাঁচিল তোলা হয়,
এরা শহরের রাংতা মোরা ক্ষত।
ভোটে নেতাদের জেতার গুটি এরা,
কাজ ফোরালেই এরা সব উদ্বৃত্ত।
কখনো সেথায় আগুন লাগলে খুব,
টিভিতে ওঠে সহানুভূতির ঢেউ।
শহর তখনও নাক সিঁটকে যে বলে,
তবু ছোটলোক গুলো বিদায় হলো না কেউ।
শহর মোড়ে রঙিন আলোর চাদরে,
সবখানেই আসে উন্নয়নের জোয়ার।
শুধুই এদেরই হয় না তখনও কিছু।
সমাজে ওদের দরকার নেই আর।
সমাবেশে এদের দরকার আগে পড়ে,
শিক্ষিত এরা হলেই শুধু ক্ষতি।
কোনভাবেই যেন হয় না তাদের ভালো,
তাহলে রাজার হবে না যে আর গতি।
শহরের বুকে এরা আসলে কালো দাগ,
কিন্তু এরাই শহর গড়ে তোলে।
উন্নয়নের জোয়ার এলেই মানুষ,
হিসাব করেই প্রথমে এদের ভোলে।
শহরের খুব অগ্রগতির পরও,
খর কুটো ন্যায় এরা শুধু পড়ে রয়।
আগুন হয়ে বাঁচে মনে ক্ষীণ আশা,
যাঁতা কলে তবু হয়না অবক্ষয়।
শহরের সব উন্নয়ের সাথে,
নিয়ম করেই হারিয়ে যায় যে এরা।
তখন উন্নয়নও মুখ ফিরিয়ে যে বলে,
বজ্জাত গুলো এবার তোরা হনা শহর ছাড়া।