নেরু কেমন আছিস ? ভালো !
খুব তাড়াতাড়ি নিভে যাচ্ছে এই কলমের আলো ।
মাঘ কুয়াশায় কেটে গেল ,
কেমন করে এই কয়েক বছরের আলো !
কোথা দিয়ে বছরগুলো কেটে গেল সময়ের কাটা ?
রেলের চাকায় বেঁধে ছিল সেই ঘড়ির কাটা ।
অনেক কষ্টে খুজে পেয়েছি তোর সেই ঠিকানাটা....।
চিনতে পারছিস রোল পঁয়ত্রিশ....
তোর সাথে শেষ দেখা দুই হাজার বাইশ।
বলতো এখনো তোকে ,
নেরু বলে কেউ ডাকে !
এবার আসি যে জন্য চিঠি সেই কথাই....
শুনলাম তুই আছিস কলকাতায় ।
তুই বলবি রাখিস নি কেন যোগাযোগ
যোগাযোগ রাখবো কোথায়,
আয়ুষ্কালে শুধুই - বিয়োগ ।
বাবার উপর টান বলতে
খুব পলকা দড়ি ,
বাবার আর লেখা হলো না
রবির পরিচিতি !!
ফিরে এলাম দেশের বাড়ি
সম্বল বলতে আমার ওই পঞ্চাশ টাকা ,
পড়ছি তখন অর্থনীতি
কবে যাব অস্ট্রেলিয়ায় ।
মাকে ছেড়ে.....
শহর ছেড়ে চলল সে দূর পাল্লায় ,
চললাম সেই বোলপুরের
রবি ঠাকুরের শান্তিনিকেতনায় ।
একদিন একটা চিঠি এলো মায়ের নাম তাতে
লেখা আছে সেই ভাঙা ছন্দে
মায়ের লেখা সেই কবিতা তে।
মা বলছে
উড়ছে জানিস কলঙ্কের বাতাস ,
কদিন পরেই তো পুজো
মাকে কি একবার দেখতে আসতে চাস !
চারা গাছটাও মারা গেছে
বলিনি , চিন্তা করবি তাই ,
আমারও শরীরটা খুব খারাপ
বলিনি দুশ্চিন্তা করবি তাই !
আমার মাথার উপর গগন ভাঙছে
আসছে না সেই জোনাকি ঘুম ,
কোথায় যাব সেই বৃক্ষ বন !
তোমার সবুজ পাতার ভিড়ে রাখবে গোপন ?
কাজ দেখলেই লাগে ভয়
চিতাতে পোড়া হবে তাই ,
পরিবারও ভুলে গেল
মৃত্যুর পর বলল ‘এটা নতুন নাকি ’ ।
নেরু তোর মনে পড়ে
পনেরোই ফেব্রুয়ারি দুই হাজার একুশ ,
পরে যাবার ভয় পাচ্ছিলিস
বললি হাতটা বাড়া ইডিয়েট !
শেষ হলো না কবিতাটা
রয়ে গেল অপ্রকাশিত প্রথম বই ,
কবিতা শুরুটা তুইও জানিস
কবিতাটা শেষ করলি কই !
সেদিন রাতে ঝিঝি ডাকছিল
লিখেছিলাম কত কবিতা ,
ওরা কি এখনো ওখানেই আছে !
জীবন কি সেই ছেড়া পাতা ?
বাবা মাঝে মাঝে বলে ওঠে
ওরে সোনু লেখাটা শেষ কর।
ভোর হলে রওনা হব
গোপন বলতে রাগবি নিজের নাম শুধু
লেখক নয় , স্বার্থ নয় । শুধু বন্ধু....!!