ভীষণ একা আমি
সেখ নাসিম আহাম্মাদ।

ভীষণ একা আমি
নির্ঘন্টের সাথে সাথেই বেজে গেছে ভোটের দামামা
মাটির বুক চিরে যেভাবে বীজ অঙ্কুরিত হয়
সেভাবেই একে একে বের হয়ে আসছে ভোটের কুশীলবরা
উলঙ্গ তরবারি লাঠি শড়কি বল্লম বোমা বারুদ
পিস্তল নিয়ে উন্নয়নের কদম তালে কুচকাওয়াজ করছে
কেউ দেখছেনা আমি ক্ষুধার্ত
আমার মত শত কোটি ক্ষুধার্তের চিৎকার
চাপা পড়ে যাচ্ছে উন্নয়নের নিত্য নতুন খেলায়।
যাদের ভোট বেশি, ভোট এলে--
তাদের দুমুঠো অন্ন জোটে জঠরে,
সাথে রঙিন পানীয় ও জুটে যেতে পারে।
হঠাৎ করেই কুশীলবরা হয়ে ওঠেন তাঁদের পরমাত্মীয়।
কিন্তু আমি যে ভীষণ একা…………
সংসদীয় আইনে মাথা গুনতি ভোটের রাজনীতির গর্ভে
লালিত হয় গণতন্ত্র। গরীব হা-ভাতা দের
ভোট এলেই স্মরণ করিয়ে দেওয়া হতে থাকে
ভোট দেওয়া তোমার সাংবিধানিক অধিকার
আমার ক্ষুধার্ত চোখে আইন-কানুন গণতন্ত্র দলীয় পতাকা
দলীয় প্রতীক সবই উপাদেয় মনে হয়
কিন্তু দীর্ঘ অর্ধাহার অনাহারে পাচন শক্তি শিথিল
আমি রেল ভেল এল আই সি এয়ারপোর্ট কয়লা বালি
পাথর চাকুরি এসব কিছু হজম করতে পারিনা
ওদের সর্বগ্রাসী ক্ষুধার কাছে আমার ক্ষুধা কিছুই নয়
তবে কি ভোট খাবো? সে উপায় কোথায়?  
ওরা তো ভোটও খায় ভোটারও খায়
ভোট ভিক্ষুকের শ্যোণ দৃষ্টি সর্বত্র।
ওই সংঘবদ্ধ দুরাত্মাদের সামনে আমি ভীষণ একা।
নীতি নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে বীজিত সৈনিকরা
যুদ্ধ লদ্ধ মালের উপর যেভাবে কর্তৃত্ব কায়েম করে
ওরাও ভোটে জিতে ক্ষমতার দম্ভে সেই কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার
লক্ষে সব কিছুতেই থাবা বসাতে চায়
পরাজিত সৈনিকের মত কাঁটা তারের বেড়ায় জড়িয়ে
অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখছি সর্বনাশা খেলা
ভোটের আগুনে দগ্ধ আমার পেটের সীমানা
পিপাসায় আড়ষ্ট আমার জিভ
সহ-নাগরিকের রক্ত স্রোতে ভিজে যাচ্ছে মাতৃভূমি
বারুদের গন্ধে বাতাস ভারী
ঢাল তলোয়ার হীন বিবেকের মৃত্যুর দুয়ারে
দাঁড়িয়ে একা আমি
ভীষণ একা।
৯/৬/২৩