না-ভাঙ্গা ঘুম ।
কলমে—সেখ নাসিম আহাম্মাদ।
দুর হতে কেন তুমি মিটি মিটি চাও
হে মৃত্যু তুমি হেসে পাশে বসে
মোর প্রাণে এসে ঘুমের পরশ দিয়ে যাও
বেদনা বিধুর হৃদয়ের জর্জর মনস্কামের পানসি
অনবচ্ছেদ ঢেউয়ে দুলে দুলে তিমির শেষে ভিড়েছে তীরে।
গোলোক ধাঁধায় পথ হারিয়েছে নগরীর বিবেক
জ্যোৎস্নার মায়ায় ফাঁদ পেতে চাঁদ অপেক্ষায়
ভাঙা হৃদয় ঘৃণায় যন্ত্রণায় দ্রোহে উদ্বেল
জেগে ঘুমনো আপোষ-কামী মৃতপ্রায় সভ্যতায়
বড়ো একা লাগে
তাই এই মৃত্যু পুরিতে একা বেঁচে থাকার কোন মানে নেই
একটা মৃত্যু- যা বদলে দেবে আইন
একটা মৃত্যু- যা গড়ে তুলবে প্রতিবাদের পিরামিড
একটা মৃত্যু- যা ভেঙে দেবে সভ্যতার যত অনিয়ম শৃঙ্খল
দিনের ক্ষরতাপে কোটি কোটি শুয়োরের
আনন্দ উল্লাসের উৎসব, দেখবোনা আমি
নিঃশব্দ পাতালপুরীর নির্জনতা থেকে।
যেখানে প্রাণের স্পন্দন আছে, স্বপ্ন ভাসে মেঘের দোলায়
যেখানে উদ্যম চিন্তা চেতনা খেলা করে, সেখানেই সূর্য
নিশাত্যয়ে যখনই নিজেকে জীবিত পেয়েছি
তখনই আতঙ্কিত হয়েছি, বক্ষে বেজেছে বেদনার দামামা
দেখেছি রুধির ধারায় সিক্ত ধরাতে দানবের দাপাদাপি
কর্ণমূলে বারবার অনুরণিত হয়েছে
গগনচুম্বী আর্তনাদের যন্ত্রণা
হে পৃথিবী, হে সূর্য, হে চাঁদ, হে বিশ্ব ব্রম্ভাণ্ডের অধিবাসী
আমি ঘুমতে চাই
বিধ্বস্ত হৃদয়ের গভীর অন্ধকারে সূর্যকে ডুবিয়ে আমি ঘুমতে চাই
আমাকে জাগাতে চেষ্টা করোনা,
বসন্তের বাতাস নির্মল আকাশ
পাখির কুহুতান কাজারীর তাজা গান
আমাকে জাগাতে পারবেনা
মৃত্যুপুরীর গভীর ঘুমে আমার আত্মা লালিত
মৃত্যুর সঙ্গে সন্ধি করে আমি ঘুমতে চাই
আমাকে জাগতে চেওনা
যেদিন বিবেকের কষাঘাতে ভক্তির শৃঙ্খল ছিঁড়ে
নদীর চ্ছল চ্ছল শব্দের মতন তুলবে আওয়াজ
আসঙ্কাকে হাতিয়ার করে চোখে বিদ্যুতের অঙ্গার নিয়ে
বধ্যভূমিকে বাসযোগ্য করার সংকল্পে এগিয়ে যাবে
গড়তে এক নতুন ইতিহাস
সেদিন ভাঙাবে ঘুম, উঠব জেগে
অন্ধকারের যোনি থেকে সূর্যের অঙ্গার
মুঠোয় নিয়ে আমাকে তোমাদের পাশে পাবে
হে বন্ধু! বড় কঠিন, বড় বন্ধুর যাত্রাপথ
এই না ভাঙ্গা ঘুমের দেশের ।।