আজগুবি হাট।
সেখ নাসিম আহাম্মাদ।
মোদের গাঁয়ের দখিন দিকে মাতলা নদীর ধার,
আজগুবি এক হাট বসেছে সে আজব কারবার।
এক দোকানি পশরা নিয়ে গাছের তলায় বসে,
শিশি বোতলের ছিপি গুলো দিচ্ছে বেজায় কষে।
জিজ্ঞাসিলে কহিল আমায় ‘গুণের’ দোকান এটা,
মাথা চুলকিয়ে ভাবলাম আমি মিছা বলছে বেটা।
বলতো ভাই কি গুন আছে তোমার ঐ পসরা তে,
দেখ পড়ে ভাই লেখা আছে আমার ঐ খসড়া তে।
ভাল মন্দ উগ্র নম্র ভদ্র জনের ভদ্রতা,
লেহন কারী দোহন কারী উদার মনের উদারতা।
হরেক রকম গুন আছে ভাই কোনটা তোমার চাই,
সস্তা দামে ই দিয়ে দেব আজ খরিদদার তেমন নাই।
এক দোকানি রয়েছে বসে ছোট্ট কুলা নিয়ে,
হিজিবিজি করছে কি-সব রঙ্গিন ধুলা দিয়ে।
জিজ্ঞাসিলেম তারে ও ভাই, তুমি কিসের কারবারি?
বেজায় ক্ষেপে আমার দিকে, উচিয়ে ধরে তরবারি।
প্রাণ ভয়ে পথ খুঁজি ভাই কোন দিকে যে যাই,
অভয় দিয়ে বললে আমায় তুমি ভয় পেওনা ভাই।
তোমার দেখি সাহস লাগবে আমার কাছে আছে,
অল্প দামে ই তোমায় দেব কেউ না জানে পাছে।
বিশালা কায় এক দোকানি কাঠের পিঁড়ি তে বসে,
কাটারি কুড়াল কাঁচি ছুরিতে শান দিতেছে ঘষে।
স্যম্পু সাবান কালির বাটি আর প্রকাণ্ড এক আয়না,
তিনি চামার নাকি কামার কিছুই তো বোঝা যায়না।
তাঁকে শুধাই ও মোটা ভাই তোমার কিসের ব্যবসা?
বলেন তিনি হেসে আমায় আমার এ কপাল দশা।
কেনা বেচা বুঝি না ভাই তবে নাপিত বলতে পারো,
দাড়ি র সাথে কামাই আমি বদভ্যাস থাকলে কারো।
বর্বরতা পাশবিকতা লোভ লালসা কাম ক্রোধ,
কেটে ছেঁটে সাজিয়ে তুলি মানুষ হবার বোধ।
এই যে আমার আয়না খানা আজগুবি এটা বটে,
যে মানুষের যেমন স্বভাব সেই ছবি টাই ওঠে।
ভয়ে ভয়ে বাঁকা চোখে তাকাই আয়না পানে,
মানুষ কোথায় জন্তুজানোয়ার সব ঘুরছে সেখানে,
সাহস করে আয়নাতে যখন নিজের মুখটি দেখি,
দেখলাম নিজেকে পশুর মত, ব্যাপার খানা কি!