তিনটি উপন্যাস লিখে সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ নিজেকে যে উচ্চতায় নিয়ে গেছেন বেশিরভাগ জনপ্রিয় বাঙালি লেখকই শত শত উপন্যাস লিখেও সেই অবস্থানের ধারে কাছেও নেই । অথচ হুমায়ুন আহমেদ বা কাসেম বাকারের তুলনায় তার পাঠকসংখ্যা নিতান্তই নগণ্য ।
পাঠক দিয়ে লেখক যাচাই করা যায় না । এমনতো হতেই পারে এই সময়ের সেরা বাংলা সাহিত্যটি রয়ে গেছে কারো বাড়িতে শেলফ বন্দী হয়ে কিংবা কি কম্পিউটারের ড্রাইভে - পাঠক কিনে পড়বে কি না সেই সংশয় থাকায়, বা লেখক প্রকাশকদের চাহিদা মত নিজের পকেটের পয়সা খরচ করে ছাপাতে রাজি নন বলে ছাপাননি।
ফেসবুকেই এমন অনেকের লেখা পড়েছি যারা বই ছাপানো লেখক নয়, কিন্তু গড়পড়তা বই ছাপানো লেখকদের চেয়ে তারা অনেক ভালো লিখে থাকেন ।
যারা লেখেন তারাই লেখক । যিনি জীবনে একটিমাত্র মানোত্তীর্ণ কবিতা লিখেছেন কি একটিমাত্র অসাধারণ ছোটগল্প কি একটিমাত্র ভালো প্রবন্ধ তিনি লেখক । এমনকি যিনি লিখতে ভালোবাসেন, এখনো অন্যের মন কাড়বার মতো কিছু লিখে ওঠেননি, ভবিষ্যতে হয়তো এমন কিছু লিখবেন বা লিখবেন না তিনিও লেখক ।
বাঙালী সাধারণত একত্রিত হয়ে খাওয়াদাওয়া করে । খেতে খেতে রাজনীতি, ধর্মচর্চা এবং পরচর্চা করে। যে বাঙালী এসবে না মজে লেখালেখি করে তাকে ধন্যবাদ । তিনি গড়পড়তা খাদ্য, রাজনীতি ও নিন্দাপ্রিয় বাঙালীর চেয়ে যে কোন বিবেচনাতেই শ্রেয়তর । পাঠক থাকুক বা না থাকুক, সব বাঙালীই যদি লিখতেন, লেখক হয়ে উঠতে চাইতেন তবে আমরা গড়পড়তা বাঙালির অনেক দোষ থেকে মুক্ত হতে পারতাম ।
তাই লেখক হয়ে উঠুন বা না উঠুন, নিজেকে লেখক ভাবুন বা না ভাবুন, কেউ আপনাকে লেখক হিসেবে মূল্যায়ন করুক বা না করুক, কেউ আপনার লেখা পড়ুক বা না পড়ুক - লিখুন ।