আলোচনা ১৯৬
অনু কবিতা, “বিপন্ন মানবতা”, কবি মধু মহাজন, অল্প কথায় অনেক গভীরতা দেয়ার চেষ্টা করেছেন। বরাবরই বলে থাকি, ছোট কবিতা, অনু কবিতা আমার বেশ পছন্দের। নিজের মতো করে ভাবতে পারি, সাজাতে পারি কবিতার বক্তব্য, নিজের মতো করে নুতন করা কবিতার বিন্যাস করতে পারি । কিন্তু বড় কবিতাতে সে সুযোগ থাকে কম, মোটামুটি সব বলাই থাকে।
বিপন্ন মানবতা, ইস্যু নিয়ে বড় বড় প্রবন্ধ লেখা যায়, আর্টিকেল তো লেখা হয় হরহামেশাই। এই ইস্যুর উপর নানা সেমিনার, সিম্পোজিয়াম লেগেই থাকে বিশ্বব্যাপী, ফলে ইস্যুটি নুতন কিছু নয় কিংবা নুতন করে ভাবার তেমন কিছু নেই। মানবতা যে আজ বিপন্ন তা বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক প্রক্ষাপট বিশ্লেষন করলেই পাওয়া যায় এমনকি বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট দেখেও স্থানীয়ভাবে বিপন্নতার মাত্রা টের পাওয়া যায় ।
ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে দুজন মানুষ বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়, পুরো জীবন একসাথে থাকার অঙ্গীকার নিয়ে। নানা ধরনের দায়বদ্ধতা, অঙ্গীকার, দায়িত্ব, কর্তব্য, সেক্রিফাইস, কম্প্রোমাইজ… ভালোবাসার মধ্যেই নিহিত থেকে। এ সব কিছুর সংমিশ্রনেই “ভালবাসার” জন্ম হয় এবং টিকে থাকে। কিন্তু যদি সেখানে থাকে, একপক্ষের ‘মোহ” অন্যপক্ষের “মিথ্যা” কিংবা উভয়ের মধ্যে দুটোই থাকে তাহলে ভালোবাসা কুলষিত হয় নানাভাবে, নানা অজুহাতে।
একইভাবে “মানবতা” কতগুলো অঙ্গীকার থাকে, কিছু থাকে লিখিত কিছু অলিখিত। মানুষ হয়ে জন্ম নেয়ার মাধ্যেমে যেমন কিছু মানবিক অধিকার ভোগ করবে তেমনি মানুষ হয়ে জন্মানোর কারনে মানবতা টিকিয়ে রাখতে কিছু দায়িত্ত কাধে নিতে হয়, কিছু কর্তব্য নিষ্ঠার সাথে পালন করতে হয় এবং কিছু অঙ্গীকার নিজের মধ্যেই ধারন করতে হয় কোন প্রকার শর্ত ছাড়াই। তবেই “মানবতা” টিকে থাকে সর্বক্ষেত্রে।
মানবতার দুটো পাখা থাকে, একটি অধিকার অন্যটি কর্তব্য। দুটোর সম্মেলনে গড়ে ওঠে মানবতা। আমার যেটা অধিকার অন্যজনের সেটা কর্তব্য পালন আবার অন্যের যা অধিকার আমার সেটা কর্তব্য পালন এবং বোধ। এভাবেই পারস্পরিক আদান প্রদানে “মানবতা’র” জয় হয়। এখানে মিথ্যা এবং মোহ একে অপরকে নানাভাবে নেগেটিভ্লি প্রভাবিত করে। মোহের মাধ্যমে মিথ্যা আশ্রিত হয় আবার মিথ্যা দিয়ে মোহ তৈরি হয়। মানবতা টিকিয়ে রাখার জন্য দুটোই বর্জনীয় যেমনটা ভালোবাসা টিকিয়ে রাখার জন্য প্রয়োজন হয়।
কবি’র জন্য রইলো শুভচ্ছা।