আলোচনা ৫৯
মা’কে নিয়ে আবেগ প্রকাশের নানা মাধ্যমে দেখি অসাধারন সব অনুভূতির প্রকাশ কিন্তু সে তুলনায়, বাবা’কে নিয়ে আবেগ প্রকাশের কিছু ঘটতি আছে। যদিও বাবা মা একে অপরের প্রতিপক্ষ নয় বরংপরিপূরক, যার যার ভুমিকায় সে সে অনন্য, কিন্তু বাবা’কে নিয়ে খুব কম কবিতা গান কিংবা অন্য কোন মাধ্যমে প্রকাশ দেখি। প্রতিটি মানুষের জীবনে বাবা’র ভূমিকা আমি নানা ভাবে পর্যবেক্ষণ করি এবং নুতন ভাবে আবিস্কার করি। ‘বাবা’, আমাকে খুব বেশী টানে, কিছুদিন আগে ‘বাবার শেষ চিঠি’ নামক আরেকটি অসাধারণ কবিতার উপর আলোচনা করেছিলাম। আজ আবার করছি, রেজাউল রেজা (নীরব কবি) এর “তুমি বাবা বলে” কবিতা।
যখনই টাকা চাই,তুমি পাঠাও-কোনকিছু আর নাহি জিগাও,তুমি বাবা বলে। ছোট বোনের বায়না মিটাও, রাগ করে তাকে নাহি পিটাও, তুমি বাবা বলে। বুড়া জামা-ছেড়া জুতা পড়ে- স্কুলে যাও,ভাঙা বাইকে চড়ে- তুমি বাবা বলে......... ইত্যাদি, কবি এখানে কতগুলো বস্তুগত বিষয়ের উপমা দিয়ে বাবার ভুমিকে ভিজুয়ালাইজেশন করতে চেয়েছেন, বাবা’কে উপস্থাপন করেছেন ত্যাগ স্বীকার করা, করিৎকর্মা, নিরহঙ্কারি, কষ্ট স্বীকারকারী ইত্যাদি নানা ভাবে, যা দেখা যায়, যার মাধ্যমে একজন বাবার ভেতরের রূপ আমরা দেখতে পাই। কিন্তু বাবা’ নামক মানুষের বিপরীত চিত্রও আমরা দেখি নানা ভাবে, অনেকের জীবনের ঘটনাপ্রবাহে।
আমি মূলত বাবা’কে এত বস্তুগত ভাবে দেখি না, যে প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে একজন পুরুষ বাবা হয়ে উঠেন, একজন প্রচণ্ড ডিমান্ডিং ছেলে কিংবা পরুষ বাবা হয়ে উঠার পর ত্যাগী হয়ে উঠেন, তখন তার ভেতর যে তোলপাড় করা পরিবর্তনের চাহিদা, নিজের সাথে যে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ চলে বাবা হয়ে উঠার জন্য... আমি একজন বাবার মধ্যে সুগুলোই দেখি বার বার। কবিতাটি পড়ার সময়, বার বার খুজছিলাম এমন কিছু। কিতু তারপরও কবি বেশ চমৎকার ভাবে দৈনন্দিন জীবনে একজন বাবা’র যে ভুমিকা, সন্তানের জন্য যে ত্যাগ স্বীকার তা পরিপূর্ণ ভাবেই ফুটিয়ে তুলেছেন। কবির জন্য একরাশ শুভেচ্ছা।