আলোচনা ৯৭
“বৈষম্য’ আসলে নুতন কোন বিষয় নয়। মানব প্রজন্মের আদিকাল থেকেই ‘বৈষম্য’ চলছে। পৃথিবীর ইতিহাস বলে, বৈষম্যবিহীন কোন সমাজ ব্যবস্থার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না, তবে বৈষম্যের ধরণ এবং রূপ যুগে যুগে পরিবর্তন হয়। বৈষম্য দূরীকরণ নিয়েও তাত্ত্বিক আলোচনা এবং ভাবনার শেষ নেই। সমাজ বিজ্ঞানী, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, অর্থনীতিবিদ থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদগণ, সবাই বৈষম্য নিয়ে বেশ চিন্তিত এবং নিজ নিজ জায়গা থেকে সবাই বেশ ভূমিকা রাখার চেষ্টা করছে। যুগে যুগে কবি সাহিত্যিকগণও বৈষম্যের কারনে সৃষ্ট মানব বঞ্চনা এবং তার প্রভাবে মানুষের দুর্দশা পর্যবেক্ষণে গল্প, উপন্যাস, কবিতার মাধ্যমে নীতি নির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করার চেষ্টা করেন, মানুষের মধ্যে মানবতাবোধ জাগ্রত করার চেষ্টা করেন। কবি শাহানারা রশিদ তার কাব্য ‘সময় যখন’তে সে কথাই বলার চেষ্টা করেছেন।
কবি বলেন, বৈষম্যের কারনে মানুষ এতটাই অস্থির থাকেন যে, বুঝে উঠতে পারেন না কখন কোথায় কি করতে হবে কিংবা কিভাবে বৈষম্যের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হবে, নিজের ইচ্ছেগুলো আকাশে উড়াতে চেষ্টা করেন কিন্তু বার বার ফিরে ফিরে আসে নিজের কাছে, সঠিক পথটা আবিস্কার করতে পারেন না। চারদিকে বৈষম্যের কারনে ক্ষুধায় মরে গরীব কিন্তু দেখার কেউ থাকে না, সবাই চমকায়, সবার বিবেক চার দেয়ালে বন্দী থাকে, কারোরই করার কিছু থাকে না। চারদিকে এত মেধা কিন্তু কেউই মেধার গুণে বৈষম্য দূর করতে পারে না কেননা বৈষম্য শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক ইস্যু।
মানুষ এখন এতটাই স্বার্থপর যে নিজের দিকে তাকানো ছাড়া অন্যের সমস্যা নিয়ে ভাবার সময় নেই। সবাই এক মোহের ঘোরে ব্যস্ত থাকে, মোহের ঘোরেই জীবনের বেশীর ভাগ সময় শেষ করে, সমাজ বদলের জন্য কিংবা অন্যের সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে খুব বেশী ভূমিকা রাখার প্রয়োজন মনে করেন না। জীবনের পুরোটা কাটে মিথ্যে দেনা পাওনা মেটাতেই।
কবির প্রতি অভিনন্দন এবং শুভেচ্ছা রইলো ।