আলোচনা ১৮৪
মাত্র ৫ লাইনে দারুন এক কাব্য উপহার দিলেন কবি সুমাইয়া হোসেন সুরভী, যার শিরোনাম “শূন্যতা”। অল্প কিছু অনুষঙ্গ বাংলা কবিতায় খুব বেশী দেখা যায়, ঘুরেফিরে সেই অনুষঙ্গগুলোই আসে নানাভাবে যেমন-প্রেম, বিরহ, প্রকৃতি ভাবনা, বাবা-মা, মৃত্যু, দেশপ্রেম, কষ্ট সম্পর্কিত (দহন,যন্ত্রনা,কস্ট), নিঃসঙ্গতা সম্পর্কিত (একাকীত্ব, শূন্যতা, বিচ্ছিন্নতাবোধ) বিষয়ক। গতকাল একটি কবিতার আলোচনা করেছিলাম যার শিরোনাম ছিল “নিঃসঙ্গতার সমাবেশ”, আজ করছি “শূন্যতা”
আমি প্রায়ই ভাবি, নিঃসঙ্গতা, বিচ্ছিন্নতা, শূন্যতা, একাকীত্ব... খুব কাছাকাছি অনুভবগুলো মানুষকে এতো পিড়ীত করে কেন? কবিদের কবিতায় এসব শব্দের বা অনুভবের এতো প্রাধান্য কেন? কাছাকাছি এধরনের অনুভূতিগুলো মানুষকে যতোটা অন্দোলিত করে, আলোড়িত করে অন্য অনুভূতিগুলো (যেমন-আনন্দ, উল্লাস, সুখ কিংবা স্পর্শ, দৃষ্টি, ভ্রমন ইত্যাদি) ততোটা প্রাধান্য পায় না, এর কারন কি? তবে কি মানুষ দুঃখ বিলাস? মানুষ যতোটা আনন্দের গান শুনে থাকে তার চেয়ে বেশী শোনে কষ্ট, বিরহ এবং নষ্টালজিক গানগুলো।
আলোচ্য কবিতায় কবি সুমাইয়া ঠিক সেরকম একটি আবহ নিয়ে কাব্য রচনা করেছেন। কবি পাচ লাইনের কবিতার পাঁচ লাইনেই প্রশ্ন রেখেছেন।
কেন মানুষের মনে বিরহ অনুভুতি জাগে? শুধুই কিছু না পাওয়ার বেদন থেকেই বিরহ অনুভূতির উতপত্তি ,না অন্য কোন মনস্তাত্ত্বিক কারন আছে?
হেরে যাওয়া এবং রেগে যাওয়া কি একে অপরের পরিপূরক? কোনটা আগে এবং কোনটা পরে? রেগেই গেলেই কি মানুষ হেরে যায় নাকি হেরে গেলে মানুষ রেগে ওঠে? খুবই প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন।
সুন্দর মুহূর্তের স্থায়িত্ব এতো কম থাকে কেন? আক্ষরিক অর্থে সময় তো আর দ্রুত চলে না অর্থাৎ সুন্দর সময়ের মানুষের অনুভুতি থেকে সময় দ্রুত চলে। সময়ের গতি সম্পর্কে মানুষের অনুভূতি তার সুখ দুঃখ আনন্দ বেদনার সাথে সম্পর্কিত।
সচরাচর ধারনা, পূর্নতার মধ্যেই জীবনের সাফল্য কিন্তু কখনো কখনো অপূর্নতার মাঝেও জীবনের পূর্নতা থাকে কিন্তু সব সময় সেটা আমরা বুঝতে পারি না
এসব কিছুর সম্মেলেনেই মাঝে মাঝে জীবনে শূন্যতা তৈরি হয়। কবি শুন্যতা খুঁজে পেয়েছেন কোন কিছু হারানোর ফলে, অপ্রাপ্তির বেদনা থেকে কিংবা অসফলতার মধ্য থেকে নয় বরং শূন্যতার এক ভিন্নতার মাত্রা যোগ করেছেন কবিতায়।
কবি’র জন্য রইলো অফুরান শুভেচ্ছা