আলোচনা ১৬৩
সাম্প্রতিক সময়ে তিনটি শিশুর মৃত্যুর পূর্বে বলা কথা বেশ আলোড়িত করেছিলো বিশ্বকে, ভাইরাল হয়েছিলো সোস্যাল মিডিয়া, ভীত কেপে উঠেছিল সাম্রাজ্যবাদীদের আগ্রাসন, বিশ্ব মানবতা জেগে উঠেছিলো আরেকবার। কি ছিল সেই শিশুদের কথা-
হৃদয় কাপানো তিনটি বাক্যঃ
১। ইরাকের এক শিশু মারা যাওয়ার পূর্বে বলেছিল “ আঙ্কেল আমার ভিডিও করবেন না, আমার হিজাব নেই”।
২। এক সিরীয় শিশু মারা যাওয়ার সময় বলেছিল “ আল্লাহর কাছে সব বলে দিবো, তোমরা আমার সাথে অন্যায় করেছো”।
৩। আরেক সিরীয় শিশু মারা যাওয়ার পূর্বে বলেছিল “মরে যাওয়াই ভালো কেননা বেহেশতে তো না খেয়ে মরতে হবে না”
কবি মোঃ সানাউল্লাহ (আদৃত কবি) তার কাব্য “শিশুর কান্নায় কাঁপে আরশ” কাব্যে আল্লাহর কাছে শিশুদের বিচার প্রার্থনার প্রতিফলন দেখতে পেয়েছেন। যুদ্ধের ডামাডোলে যখন একটি শিশু না খেয়ে ছিলো, যখন একটি শিশু যন্ত্রনা কাতর ছিল, তখন তাদের বুক ফাটা কান্নায় আকাশ পাতাল ভারী হয়ে উঠেছিল, তাদের আর্তনাদের আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠেছিল বলে আমরা বিশ্বাস করি। কিন্তু যুদ্ধবাজ বিশ্বনেতাদের বুক কাপেনি।
কবি তার কাব্যে, শিশুদের বিচারের প্রতিফলন দেখতে পেয়েছেন- “সেই শিশুটির নালিশে কি বিশ্বের কোটি মানুষের, জীবন নিরাপত্তাহীন হয়ে ধ্বংস ডেকে আনেনি? করোনার বিষবাষ্পে কি বাতাস দুষিত হয়নি”? আল্লাহ তায়ালা কোন কোন অন্যায়ের বিচার পৃথিবীতেই করেন আবার কোন কোন অন্যায় অত্যাচারে বিচার তুলে রাখেন বিচার দিবসের জন্য। আমরা নিশ্চিতভাবে জানি না কোনটা কখন ঘটবে, প্রত্যাশা করতে পারি সকল অন্যায়ের বিচার অন্যাকারী পৃথিবীতেই ভোগ করবেন কিন্তু আল্লাহ তায়ালার বিজ্ঞতা আমরা জানি না, আমরা তার বিজ্ঞতা এবং সূক্ষ্ম বিচারের উপর পরিপূর্ন আস্থা রাখি। কবি মনে করছেন, পৃথিবীতে নানা অন্যায়ের, অত্যাচারের, যুদ্ধে মানুষ হত্যার বিচার হিসেবে আল্লাহর তরফ থেকে গজব অর্থাৎ ‘করোনা” নামক মহামারী নাজেল হয়েছে, এটা মানুষেরই কর্মফল, আল্লাহ তায়ালা তার বিচারের কিছু নজির রেখেছেন। সে কারনেই কবি সিরিয়ার সেই শিশু অশ্রুভরা কন্ঠের প্রার্থনার প্রতিফলন হিসেবেই করোনাকে দেখছেন।
আবার যুদ্ধ শুরু হয়েছে, রাশিয়া বনাম ইউক্রেন কিন্তু ধারনা করা হচ্ছে, এই যুদ্ধে আরো ৮০টি দেশ জড়িয়ে পরবে এবং ক্রমান্বয়ে তা তৃতীয় বিশ্ব যুদ্ধের রূপধারন করবে, তাই কবি, পেছনের যুদ্ধ, অত্যাচারিত শিশুর দীর্ঘশ্বাস এবং তার প্রতিফলন হিসেবে মহামারী “করোনাকে” উদাহরন হিসেবে রেখে সাবধান বানী উচ্চারন করেছেন।
“মানুষের হীনমন্যতাই ডেকে আনবে মহাবিপর্যয়!
তখন আর পাবে না খুঁজেও, বিকল্প সমাধান”।
সমসাময়িক সমস্যা নিয়ে, মানুষের বোধদয় উদ্রেক করার জন্যই কবির এই কাব্য রচনা
কবির জন্য রইলো শুভেচ্ছা