আলোচনা ১৫৯
পরিণাম ভেবে যদি মানুষ তার কর্ম করতো তাহলে পৃথিবীটা অনেক সুন্দর হয়ে উঠতো। কিছু ফলাফল আমরা আগেই আচ করতে পারি, অনুমান করত পারি কি ভয়ংকর পরিণতি হতে পারে কিন্তু তারপরও করি, নিজের অহং বোধের কারনে, অহমিকার কারনে, অন্যের উপর আধিপত্য বিস্তার লাভের জন্য কিংবা নিজের অস্তিত্ব জানান দেয়ার জন্য। যে কোন ধরনের হিংসা, লোভ, লালসা, অহংকার কিংবা জেদের কারনে যে কাজ করা হয় তার পরিনতি কখনোই ভালো হয় না, কখনো কখনো সাময়িকভাবে ভালো মনে হতে পারে কিন্তু শেষ বিচারে তার পরিনতি ভালো হয় না। পৃথিবীতে যতো ভয়ংকর সব কাজের পরিণাম আমরা দেখতে পাই, বিশ্লেষন করলে দাঁড়ায় সবগুলোই হিংসা, লোভ, লালসা, অহংকার জেদ কিংবা আধিপত্যা বিস্তারের কারনে হয়েছে। মানুষের কল্যান বিবেচনায় গৃহীত কোন কাজের পরিণত ভয়াবহ খারাপ হয় না।
কবি গোপাল চন্দ্র, সে বিষয়টিই খুব অল্প কথায় তার কাব্য “ভয়ংকর পরিণতি’তে” লিখেছেন। তিনি একটি তুলনামূলক প্রেক্ষাপট একে বিষয়টি স্পষ্ট করতে চেয়েছেন। প্রচন্ড শক্তিধর প্রানী ডাইনোসর একদিন এই ধরাতে আধিপত্য নিয়ে বসবাস করেছিলো কিন্তু কালের পরিক্রমায় আজ বিলুপ্ত প্রানী কিন্ত তেলাপোকা আজও টিকে আছে নিজের অস্তিত্ব নিয়ে।
মানুষ নিজের আধিপত্য বিস্তারের জন্য কখনো মানুষের উপর আক্রমন করে, কখনো প্রকৃতির উপর নির্বিচারে অত্যাচার চালায়, কখনো অন্য কোন প্রানীর উপর করে নির্মম অত্যাচার। ফলে প্রকৃতিও একদিন ভয়ংকর সব বিপর্যয় দিয়ে তা অত্যাচারীকে ফিরিয়ে দেয়। ইতিহাসে সবই লেখা থাকে কিন্তু “ইতিহাসের সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো, ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না”।
বর্তমান সমসামোয়িক ইস্যুত হলো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, সম্প্রতিক সময়ে ছিল আফগানিস্তান যুদ্ধ, ইরাক যুদ্ধ, সিরিযা যুদ্ধ, প্যালেস্টাইন যুদ্ধ, কাশ্মির যুদ্ধ, তারও আগে ছিল গালফ ওয়ার। হিরোশিমা নাগাশিকাতে পারমানবিক বোমা নিক্ষেপ সহ অসংখ্য ইতিহাস আমরা জানি। এসবে ভয়াবহ পরিনতিও বিশ্ববাসী জানে কিন্ত তারপরও কেন তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে, এর ভয়াবয় পরিণতি কি অজানা?
কবি মূলত তার কাব্যে, মানুষের অবিবেচনাপ্রসূত কাজের কি ভয়াবয় পরিণাম হয়, সে কথাই আরেকবার মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন সবাইকে। ভয়ংকর এই পরিণাম কখনো এক প্রজন্মের কাজের ফলে সেই প্রজন্মই ভোগ করে কখনো বা অন্য প্রজন্ম আবার কখনো বা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে তা প্রবাহিত হয় যেমন-হিরোশিমা নাগাশিকাতে পারমানবিক বোমা নিক্ষেপ।
কবির জন্য রইলো শুভেচ্ছা