আলোচনা ১৫
সৃষ্টি জগতে রহস্যের শেষ নেই, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশী রহস্যময় জায়গা দুটি-আবিস্কার এবং পুনরুৎপাদন। প্রথমটি নিয়ে মানুষের ভাবনা চিন্তার শেষ নাই, নাসা থেকে শুরু করে কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট, সর্বত্রই নুতন কিছু আবিস্কারের নেশা। মানুষ নিরন্তর চেষ্টা করে চলেছে, চাঁদে চরকা কাঁটা বুড়ি কে? মঙ্গল গ্রহে আদৌ প্রানের অস্তিত্ব আছে কিনা কিংবা এলিয়েন প্রজাতি বলে কোন প্রাণীর অস্তিত্ব সৃষ্টি জগতে আছে কিনা ইত্যাদি। ফলে ম্যাথম্যাটিকস, ফিজিক্স, ক্যামেস্ত্রি...সব জানতে হচ্ছে মানুষকে, লক্ষকোটি ঘণ্টা, যুগের পর যুগ, প্রজন্মের পর প্রজন্ম কাটিয়ে কাটিয়ে দিচ্ছে গবেষণাগারে। একাগ্রতার সাথে, গভীর চিন্তায় মগ্ন থাকছে নুতন কিছু আবিস্কারের নেশায়। কপালে জমছে ঘাম। ক্ষুদ্র কিছুর মধ্যে খুজে পাচ্ছে বিশালতা।
কবি মাহমুদ সিদ্দিকীর কাব্য ‘রসায়নাগার’, অনু কাব্য কিন্তু আমি আলোচনায় খোঁজার চেষ্টা করছি বিশালতা। কাব্যে ব্যবহৃত প্রত্যেকটি শব্দ অনেক অর্থ বহন করে। বন্ধ ঘর মানে কি? কেন কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমছে? অন্তর্বাস কেন খুলছে? অন্তর্বাস খোলা নিয়মিত কোন ঘটনা নাকি আলোচ্য কবিতায় বিশেষ কোন কারনে তা খোলা হচ্ছে? বন্ধ ঘরের সাথে তুলকালাম কাণ্ডের আন্ত সম্পর্কই বা কি? অন্যদিকে কবিতার শিরোনাম ‘রসায়নাগার’, তার সাথে অন্তর্বাস এর কি সম্পর্ক ইত্যাদি।
কবিতার শিরোনাম এবং বন্ধ ঘর থেকে মনে করছি একটি গবেষণাগার ফলে নুতন কিছু আবিস্কারের চিন্তায় কপালে ঘাম জমছে আবার অন্তর্বাস এবং সৃষ্টি থেকে মনে হচ্ছে পুনরুৎপাদন প্রক্রিয়া ফলে উত্তেজনায় কপালে ঘাম জমছে। দুটো ক্ষেত্রেই সৃষ্টির ইচ্ছা, আনন্দ এবং তুলকালাম কাণ্ড। শ্রেণী ভেদ কিংবা অবস্থা ভেদে যে কোন মানুষের জন্যই নুতন প্রজন্মের আগমন একটি হুলুস্থুল কাণ্ড কিন্তু প্রকাশভঙ্গির ভিন্নতা থাকে। দুটো ভিন্ন ঘটনার আন্তমিল ঘটিয়েছেন, সৃষ্টি এবং আবিস্কার এর মাধ্যমে।
একজন পাঠক হিসেবে আমি কবিতাটিকে এভাবেই অনুধাবন করেছি, কবির ভাবনার সাথে তার ভিন্নতা থাকতেই পারে। আমার ভাবনায় কবিতাকে অসাধারন মনে হয়েছে, খুব অল্প কথায় অনেক বেশী বলা হয়েছে।
কবির জন্য শুভেচ্ছা রইলো ।