আলোচনা ১৪৯
মানুষ ভুখন্ডের স্বাধীনতা চায়, ফিলিস্তিন চায়, আমরাও চেয়েছিলাম। মানুষ ব্যক্তি স্বাধীনতা চায়, নারী স্বাধীনতা নিয়ে লড়াই চলছে শতাব্দী ধরে, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা চায়, রাজনৈতিক স্বাধীনতা চায়... আরো কত রকমের স্বাধীনতা আছে। কিন্তু “প্রেমের স্বাধীনতা”, একটু অদ্ভুতই মনে হলো। এটা আবার কেমন স্বাধীনতা !!!
সে কারনে, আগ্রহ তৈরি হলো, ফাইয়াজ ইসলাম ফাহিম এর কবিতা “ প্রেমের স্বাধীনতা চাই”, পড়া এবং আলোচনা করার। কবি প্রেমকে নিষ্কলুষ সত্ত্বা হিসেবে দেখেছেন, যেখানে কোন প্রকার পাপ পঙ্কিলতা নেই, কথায় যেমন বলে-“প্রেম স্বর্গ থেকে আসে, স্বর্গে চলে যায়”, প্রেমের সাথে কোন আপোষ নেই, প্রেমের কোন গতিরোধ নেই, প্রেম হবে বিরামহীন, অবিচল, নিরন্তর এবং পূর্ন আস্থার উপর নির্ভরশীল।
কবি’র বক্তব্যের সাথে অনেকের মতোবিরোধ থাকতেই পারে, সেটা ভিন্ন আলোচনা, সমালোচনা। কিন্তু কবি কিভাবে ‘প্রেমের স্বাধীনতা” দেখতে চেয়েছেন, সেটা তার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গী। কবির ভাষ্য অনুযায়ী, প্রেমের মধ্যে আবার বৈধ, অবৈধ, পরকীয়া ইত্যাদি শব্দ জুড়ে দিয়ে কেন প্রেমকে বিষাক্ত করা হয় !!
এখন যেমন, ভিসা মুক্ত পৃথিবীর জন্য আন্দোলন চলছে, অর্থাৎ কোন ভুখন্ডের কোন সীমনা থাকবে না। পণ্যের মতোই মানুষের অবাধ যাতাযাত থাকবে। কোন নির্দিষ্ট দেশের আইন, রীতি নীতি ইত্যাদির উপর নির্ভর করে মানুষের জীবন প্রবাহিত হবে না। পুরো বিশ্ব হবে একটি মাত্র ভূখন্ড, যার যেখানে ইচ্ছে বসবাস করবে
একইভাবে প্রেমকে কোন নৈতিকতার মানদন্ড দ্বারা মাপা যাবে না, কোন দেশের নীতিমালা, আইন কানুন দ্বারাও বাধাগ্রস্থ করা যাবে না, প্রেমের ক্ষেত্রে কোন ধর্মীয় অনুশাসন দিয়েও বিচার করা যাবে না। প্রেম হবে, দুজন প্রাপ্ত বয়স্ক নর ও নারীর নিজেদের ইচ্ছেনুযায়ী একটি জীবন প্রক্রিয়া, যেখানে শরীর, মন, আত্মা, সংযম ইত্যাদি সবই হবে তাদের নিজেদের মতো করে। বাইয়ের কোন আইন, নীতিমালা কিংবা অনুশাসন এখানে চলবে না, তবেই সেটাকে বলা হবে “প্রেমের স্বাধীনতা”।
ভাবনাটি একেবারেই নুতন কোন ভাবনা নয়, অনেকেই এভাবে প্রেমকে দেখতে চায় কিন্তু প্রকাশ্যে হয়তো উচ্চারন করে না, নানা সীমাবদ্ধতার কারনে কিন্তু কবি এখানে খোলামেলা, কোন প্রকার রাখঢাক ছাড়াই “প্রেমের স্বাধীনতা”কে ব্যাখা করেছেন। আমাদের অনেকের সেটা পছন্দ হতে পারে কিংবা নাও হতে পারে।
আমার নিজের হয়তো ভিন্ন কোন দৃষ্টিভঙ্গী আছে প্রেম বিষয়ক ইস্যুতে কিন্তু কবিতাটি পড়ে অন্তত এটুকুতো শেখা হলো, প্রেমকে এভাবেও ভাবছে কেউ কেউ।
কবির জন্য রইলো শুভেচ্ছা।