আলোচনা ৬৪
মাঝে মাঝে কিছু কবিতা অকারণেই ভাল লাগে, অকারণে মানে খুব স্পষ্ট করে ব্যাখা দেয়া যায় না কিন্তু খুব ভাল লাগে। হয়তো কবিতার আবহ নিজের কোন ঘটনা কিংবা পরিস্থিতির সাথে মিলে যায় কিংবা কোন কোন শব্দ হয়তো মনকে খুব নাড়া দেয়, তাই ভাল লাগে। আমি কবিতার উপর আলোচনার জন্য খুব ভাল কোন আলোচক নই, কবিতার ব্যাকরণ খুব ভাল বুঝি না, শুধু কোন কোন কবিতা পড়ে নিজের ভাল লাগা কিংবা মন্দ লাগা ব্যক্ত করতে পারি। এই কবিতার উপর আলোচনা অনেকটা সে কারনেই।
কবিতাটির কয়েকটি শব্দ/লাইন মনকে খুব নাড়া দিয়েছে, যেমন- ভাবনায় ভাবনাকে ব্যস্ত, শুন্যতা আর শুন্যতার বিশাল বিস্তৃতি, আকড়ে ধরে আছে যেন অনেকটা জায়গা জুড়ে, অপেক্ষারাও ক্লান্ত হয়ে যায়, অপেক্ষার বিশালতা, অপেক্ষার নিষ্ঠুরতা, আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আছে প্রাপ্তি।
সবচেয়ে বেশী ভাল লেগেছে, কবিতার শিরোনাম ‘অপেক্ষারাও ক্লান্ত’ আমি একবার কোন কবিতায় লিখেছিলাম, ঘুমাতে ঘুমাতে ক্লান্ত হয়ে পরেছে, ক্লান্তি দূর করতে গিয়ে আবারও ঘুমিয়ে পরেছে। অনেকটা সেরকম, অপেক্ষারাও ক্লান্ত হতে পারে। আমাদের প্রত্যেকের জীবনে ‘অপেক্ষা’ শব্দটি খুব পরিচিত, বলা যায় জীবনের এক চিরন্তন অনুষঙ্গ ‘অপেক্ষা’। অপেক্ষার কারন, সীমা কিংবা পেছনের ব্যাখায় ভিন্নতা থাকতে পারে কিন্তু অপেক্ষা জীবনে আছেই। ধর্ম, বর্ণ, জাত-পাত, বয়স, লিঙ্গ, দেশ কাল নির্বিশেষে অপেক্ষা সবার জীবনেই আছে। আলোচ্য কবিতায় কবি, অপেক্ষাকে চিত্রারন করেছেন ভিন্ন এক প্রেক্ষাপটে গতানুগতিক প্রেমের জন্য অপেক্ষা কিংবা সাফল্যের জন্য অপেক্ষা নয় বরং শুন্যতাকে মুছে ফেলার অপেক্ষা, ভিন্নতাকে পাবার অপেক্ষা... চমৎকার উপস্থাপন ।
আমার বিবেচনায়, অসাধারণ এক কাব্য রচনা করেছেন কবি কনিকা সরকার, অভিবাদন কবি।