আলোচনা ৩৩
গতকাল আলোচনা করেছিলাম কবি সমাদ্রি লিখিত কবিতা “জীবন মানে”, আজ আবার আলোচনা করছি কবি পলাশ দেব নাথ এর কবিতা ‘জীবন’। একই রকম না হলেও খুব কাছাকাছি অর্থাৎ জীবনকে ঘিরে জানার নানা ইচ্ছে, জীবনকে নিয়ে নানা প্রশ্ন, জীবনের মানে কি কিংবা জীবনের ক্ষণস্থায়ী অস্তিত্ব কেন...... এসবই কবিতার উপজীব্য।
কবি পলাশ দেবনাথ জীবনের আরেকটি দিক উন্মোচন করেছেন, প্রেয় প্রত্যেকটি মানুষই তার জীবনের স্বপ্নগুলো তিল তিল করে গড়ে তোলে, অনেক সময় পাশে কেউই থাকে না। চেখের জলে আর সীমাহীন কষ্টের মধ্য দিয়ে জীবন এগিয়ে চলে, হাসির আড়ালে কষ্টগুলো লুকিয়ে থাকে, তারপরও স্বপ্ন পুরনের চেষ্টায় অবিরত ছুটে চলার নামই জীবন। জীবনের অলিতে গলিতে বাস করে অন্ধকার কিন্তু আশা পূরণের চেষ্টায় মানুষের গতি থামে না। এত চেষ্টার পর যখন স্বপ্ন পূরণের উল্লাস থাকার কথা তখনই জানান দেয় জীবনের ক্ষণস্থায়ী অস্তিত্ব, প্রস্থান করতে হবে খুব দ্রুত। নিজের এত কষ্টের তৈরি ঘর ছেড়ে চলে যেতে হবে, অন্যরা জায়গা নেবে নিজেরই ঘরে। নিজের কষ্টার্জিত অর্জন ভোগের সময় মেলে না, এত কষ্টের অর্জন দিতে হয় বিসর্জন, এটাই প্রকৃতির নিয়ম। আমরা তা মানি কিংবা না মানি, তাতে প্রকৃতির কিছুই যায় আসে না, এটাই জীবনের ধর্ম।
জীবনের আরও একটি দিক উন্মোচন করেছেন কবি, এমন কখনো কখনো সময় আসে যখন নিজেকে খুব একা লাগে, জীবনের শেষ পরিনতিতে বোধ হয় এমনটা হয়, অন্যের কাছে আর নিজের তেমন কোন প্রয়োজন থাকে না। একটা সময় যখন অন্যের জন্য নিজের ব্যস্ততা কমে না আবার জীবনের শেষে তার উলটোটাই দেখা যায়, তখন আরও একা লাগে, খুব অসহায় লাগে। যতভাবেই আমরা এসব এড়িয়ে চলতে চাই না কেন আসলে এসবই জীবনের ধর্ম। কবির জন্য শুভেচ্ছার রইলো, চমৎকার একটি কবিতা উপহার দেবার জন্য।