আলোচনা ১৬৫
কবিতাটি ইচ্ছে করেই আলোচনায় নিয়ে আসলাম। যদিও টাইটেলে লিখা থাকে X কবিতার উপর আলোচনা, আসলে সেই অর্থে আলোচনা হয় কি না, আলোচ্য কবি’র মতোই আমার মনেও একই প্রশ্ন আছে। সে কারনে আলোচনা না বলে, কবিতা পড়ে আমার অনুভূতি বলাই বোধ হয় ভালো। কেননা, আমি নিজে খুব একটা কবিতার ব্যাকরণ জানি না। ব্যাকরন মেনে কবিতা পড়িও না, লিখিও না। বাংলা কবিতার আসর থেকে কবিতার ব্যাকরন শেখার চেষ্টা করছি।
ফলে কিছু প্রশ্ন সার্বজনীন, আমার কবিতা কি হচ্ছে? আমার আলোচনা কি হচ্ছে? আমার মন্তব্য কি ঠিক হচ্ছে? ইত্যাদি প্রশ্ন মাথায় নিয়েই আমরা আসরে থাকি প্রতিনিয়ত। প্রতিদিন অসংখ্য কবিতা প্রকাশিত হয়, আলোচনা প্রকাশিত হয়, ভালো কিছু মন্তব্যও আসে মাঝে মাঝে। এ ধরনের দ্বিধা নিয়েই আমাদের এগিয়ে যাওয়া।
মূল প্রশ্ন হলো, কে বলে দেবে প্রশ্নের উত্তর, কবিতা হলো কি না? ব্যাকরন মেনে কবিতা লিখা মানেই কি ভালো কবিতা? আবার কোন প্রকার নিয়ম নীতি ছাড়া মনের মাধুরী মিশিয়ে একটা কিছু লিখলেও কবিতা হয় কি? ফলে, কবিতা হয় কি না, এ প্রশ্ন কার কাছে করবো? যিনি কবিতার ব্যাকরণ ভালো জানেন নাকি যিনি কিছু নিয়ম নীতি মেনে পাঠকের মনে গেথে রাখার মতো কবিতা লিখতে পারেন, তার কাছে? কতোটা ব্যাকরন মেনে আর কতোটা প্রেক্ষিত বিবেচনায় রেখে, পাঠকের চাওয়াকে মর্যাদা দিয়ে এবং সর্বোপরি, লেখকের ভেতর থেকে উঠে আসা কথামালা, শব্দচয়নের মাধ্যমে কবিতা হয়ে উঠবে “কবিতা”, কবিতা কি শুধুই কথা? কবিতা কি শুধু আবেগ মিশ্রিত কিছু শব্দের সমষ্টি ইত্যাদি নানা প্রশ্নের মধ্যে থেকেই কবিতা লিখা।
কেন কবিতা লিখি, এ প্রশ্নের উত্তর নিজের মধ্যে পরিস্কার থাকলে, এতো প্রশ্নের জন্ম হয় না। নিশ্চই চাই, আমার লিখা কবিতা পাঠকের মনকে নাড়া দিক, তা না হলে, আসরে কবিতা প্রকাশ করা কেন? নিজের ডায়েরীতে লিখে রাখলেই হতো। পাঠক কবিতা পাঠের পর মন্তব্য করুক, এটাও চাই কিন্তু শুধু মন্তব্যের সংখ্যা বাড়াতে চাই? তাহলে কিছু কৌশল অবলম্বন করলেই মন্তব্যের সংখ্যা অনেক বেড়ে যাবে। আসলে আমি চাইটা কি? এ প্রশ্নের উত্তর জানা থাকলেও, কবিতা হয় কি না সে প্রশ্নের বা দ্বন্দ্বের অনেকটাই অবসান হবে।
ধরা যাক, কবি এস এ ইমন এর আলোচ্য কবিতা “জানি না কবিতা হয় কি না”?, এটা কবি’র নিজের মনের কথা নয়। একজন কবি সব সময় নিজের জীবন কিংবা অভিজ্ঞতা থেকেই কবিতা লিখেন না, নিজের পর্যবেক্ষন থেকেও কবিতার ইস্যু নির্বাচন করে থাকেন। ফলে, কবিতার শিরোনাম হিসেবে, মানুষের মনের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব কাজ করে যেটা নিয়েও কাব্য রচনা হতে পারে। সে অর্থে কবি, মানুষের নিজের ভেতরে প্রশ্ন, নিজের সাথে নিজের দ্বন্দ্বের বিষয়টি খুব চমৎকার ভাবেই তুলে এনেছেন। শখের বশে কবিতা লিখে অনেকেই কিন্তু সেটা আবার অন্যের বিরক্তির কারন হয় কি না, সবাই তো বেশ ভালো ভালো মন্তব্য করে কিন্তু বুঝে উঠতে পারে না আসলে মন্তব্যগুলো অনেষ্ট মন্তব্য কি না, অনেক অভিজ্ঞ কবিগনও কবিতা পড়ে, তারাই বা কি মনে করবে ইত্যাদি নানা ধরনের প্রশ্ন মনের মধ্যে কাজ করে অনেকেরই। অনেকের মনে কি প্রশ্ন জাগছে, কবি সেটা আচ করেই একটি কাব্য রচনা করলেন।
কিন্তু অন্যারা যে খুশী করার জন্য মন্তব্য করে থাকেন, যে কারনে কবির মনে সন্দেহের উদ্রেক হলো, মন্তব্যগুলো আসলে সঠিক কি না কিন্তু কবি নিজেই আবার সে ভুলটি করলেন, মন্তব্যের প্রতিউত্তরে একই কথা সবাইকে প্রতিউত্তর হিসেবে দিলেন। একেকটি মন্তব্যের উপর আলাদা আলাদা, ভিন্ন ভিন্ন প্রতিউত্তর হতে পারতো কিন্তু তা হলো না, ফলে মন্তব্যকারীও সন্দেহের মধ্যেই থেকে গেলেন, তার মন্তব্য কবি ঠিক মতো পড়লেন কি না, পুরো ব্যবস্থাটাই একটা সন্দেহের জন্ম দিলো। সবশেষে, কবিতা হলো কি না, সে প্রশ্নের আর উত্তর পাওয়া হলো না।
কবির জন্য রইলো শুভেচ্ছা