আলোচনা ১৬১
স্বর্গে কেমন সুখ হতে পারে তা কল্পনা করে আমরা বাস্তব বা ইহজগতে তার কাছাকাছি কিছু একটা যখন দেখতে পাই তখন “স্বর্গীয় সুখ” শব্দিটি ব্যবহার করে থাকি। যে জিনিস এখানে পাওয়া যাবে না, পাওয়ার কথা না কিন্ত হঠাৎ কোন কারনে পেয়ে গেলাম তখন অতি আশ্চর্যে একমটা বলে থাকি। তার অর্থ দাঁড়ায়, এখানে আর ওখানে এর মধ্যে একটা পার্থক্য আছে। স্বর্গে কি আছে বা থাকবে আমারা কেউই তা নিশ্চিত ভাবে জানি না, কেবল বিশ্বাসের কারনের, ধর্মীয় গ্রন্থে বর্নিত স্বর্গের চিত্র আমরা পাই এবং সে অনুযায়ী, সে রকম সুখ ইহজগতে থাকবে না, থাকার কথাও না।
ফলে, ইহজগতে যা যা আমরা দেখি বা করি তার কিছুই “স্বর্গীয় সুখ” হবে না, সে রকম সুখ ইহজগতে পাওয়া যাবে না, আশা করাও ঠিক হবে না। কবি শম্পা দত্ত ঠিক সে রকম একটি থীম নিয়েই লিখেছেন তার কাব্য ““স্বর্গীয় সুখ”, তিনি স্বর্গের যে সুখের কথা বলা হয়েছে তারই একটি কাল্পনিক চিত্র আকার চেষ্টা করেছেন।
কি সেই কাল্পনিক “স্বর্গীয় সুখ” এর চিত্রায়ন-
এখন আমরা পৃথিবীতে যেমন মানুষ দেখি, মানুষগুলো আর তেমন থাকবে না। শারীরিক গঠনগত ভাবে না কিন্তু আচরনগত ভাবে ভিন্ন মানুষ হবে যেমনটা থাকবে স্বর্গে। মানুষের মধ্যে কোন প্রকার নীচুতা, হীনতা থাকবে না, মানুষগুলো সব হবে উদারতার ভরপুর, ভালোবাসায় ভরপুর, সেখানে কোন কালীমা থাকবে না। মানুষের মাঝে কোন ভেদাভেদ থাকবে না, শাষন শোষন থাকবে না, অত্যাচার নির্মমতা থাকবে না, সবাই হবে একে অপরের কল্যানে পাগল, সবাই হবে সুহৃদ।
“স্বর্গীয় সুখ” এর আরো কিছু লক্ষন হলো- সেখানে কোন রাজনীতি থাকবে না, হার জীতের বিষয় থাকবে না, কাউকে ঠকানোর প্রশ্ন উঠবে না, কর্মময় জীবন হবে সুখ সাচ্ছন্দ্যে ভরপুর। সেখানে কেউ কম বেশী পাবে না, সাম্যের ব্যবস্থা থাকবে অটল।
অমানবিকতা থাকবে না, অত্যাচার অনাচারে কোন মৃত্যু হবে না ইত্যাদি ইত্যাদি। যদি পৃথিবীর মানুষের মধ্যে এ জাতীয় বৈশিষ্ট্য আনয়ন করা যায় তাহলে আর, “স্বর্গীয় সুখ” এর জন্য স্বর্গে যাবার অপেক্ষা করতে হবে না, ইহজগতেই “স্বর্গীয় সুখ” পাওয়া যাবে।
আসলে, কবি কিছুক্ষন একটি কাল্পনিক সময়ে কাব্যটি রচনা করেছেন ফলে স্বর্গ সম্মপর্কিত তার কাল্পনিক ভাবনার একটি রূপ দেয়ার চেষ্টা করেছেন। আমরা যদি, আমাদের এই তিক্ত জীবনে কিছুক্ষন কল্পনায় থেকে ইহজগতেই “স্বর্গীয় সুখ” পেতে পারি ক্ষতি কি!!
কবির জন্য রইলো শুভেচ্ছা।